
না ফেরার দেশ চলে গেলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল নোমান। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকায় হাসপাতালে নেয়ার পথে তিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না ——রাজেউন) মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি স্ত্রী, পুত্র, কণ্যা, নাতি নাতনি রাজনৈতিক কর্মী সমর্থকসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে গেছেন।
তাঁর জানাজা আগামী শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) বাদে জুমা চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া রাউজানের গহীরা গ্রামের বাড়িতে বাদে আসর জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছে নগর বিএনপির সাবেক সহ দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী।
তাঁর মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আমির খসরুর শোকবার্তা:
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালিন সময় থেকে দলকে সুসংগঠিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তিনি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন দল অন্তঃ প্রাণ নেতা। তার মৃত্যুতে দেশ ও জাতীয়তাবাদী দল এক ত্যাগী, সাহসী, সংগ্রামী সজ্জন ও বর্ণাঢ্য রাজনীতিবিদকে হারালো। দেশের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডে তার অবদান দেশ, জাতি ও দল চিরদিন মনে রাখবে। তার মৃত্যুতে দলের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তার কর্মের মধ্যে দিয়ে তিনি নেতা কর্মীদের কাছে অমর হয়ে থাকবেন। খসরু মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাতের শোকবার্তা: সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুর সংবাদ ছিল আমার জন্য ভীষণ কষ্টের। তার হাত ধরেই আমরা রাজনীতি শুরু করেছি। বিএনপির রাজনীতিতে তিনি ছিলেন একজন কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অনন্য এক নেতা। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালিন সময় থেকে দলকে সুসংগঠিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তিনি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার একদফার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কেবল চট্টগ্রাম নয় বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনে এক কিংবদন্তি পুরুষ। তিনি শুধু নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি ছিলেন নেতাদের নেতা।বিএনপির রাজনীতিতে তিনি চিরস্বরণীয় হয়ে থাকবেন।
মেয়র বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তিনি ছিলেন এক অবিচল যোদ্ধা। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং আজীবন জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধে তার সাহসী ভূমিকা অবিস্মরণীয়। তাঁর মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে আবদুল্লাহ আল নোমানের অবদান চিরস্মরণীয়। তিনি চট্টগ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নানা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। চট্টগ্রামের ব্যবসা বাণিজ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর প্রচেষ্টা ছিল প্রশংসনীয়। তিনি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, ইষ্ট ডেল্টা ইউনির্ভাসিটি, স্বৈরাচার বিরোধী ৯০ গণ আন্দোলনে শহীদের স্মৃতি রক্ষায় প্রতিষ্ঠা করেন এন এম জে মহাবিদ্যালয়। এসব ছাড়াও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের উন্নয়নে তাঁর অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জনগণের কল্যাণে তাঁর নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ আজও চট্টগ্রামের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
আবুল হাশেম বক্করের শোকবার্তাঃ
বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর তার শোকবার্তায় বলেছেন, বর্তমান দুঃসময়ে তার মতো রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হলো।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী এবং এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বর্তমান ক্রান্তিকালে দেশ একজন যোগ্য নেতাকে হারাল। তিনি ছিলেন ৭১ এর রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আবদুল্লাহ আল নোমান তার রাজনৈতিক জীবনে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালনের জন্য দেশবাসী তাকে চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।