নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, আন্তর্জাতিক নৌপথে নিরাপদ ও দক্ষ শিপিং সেবা প্রদান করা এবং বাংলাদেশের সিংহভাগ আমদানী ও রপ্তানী পণ্য নিজস্ব জাহাজ বহর দ্বারা পরিবহন করার উদ্দেশ্যে বিএসসি প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী নৌ-বাণিজ্যের সহায়ক পরিবহন নেটওয়ার্ক এর ভিত গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে সরাসরি তাঁর অধীনে রেখেছিলেন। বর্তমানে এটি অনেক শক্তিশালী। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিএসসির নীট মুনাফা হয়েছে ২৪৬ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ’র মোহনা হলরুমে বিএসসির ৪৬তম বার্ষিক সাধারণ সভায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন,কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা লাভের মাত্র ৪ মাসের মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম সমুদ্রগামী জাহাজ “বাংলার দূত” এবং এর পর পরই “বাংলার সম্পদ” নামক অপর একটি জাহাজ কর্পোরেশনের বহরে সংযোজিত হয়। বঙ্গবন্ধুর সুচিন্তিত দিক-নির্দেশনায় তাঁর জীবদ্দশায় ১৯৭৪ সালের মধ্যে ২৬টি সমুদ্রগামী জাহাজ বিএসসি’র জাহাজ বহরে সংযোজনের ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনার আলোকে এবং তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার কর্তৃক সামগ্রিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বিএসসি’র উন্নয়নে নানাবিধ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ২০১৮-১৯ সালে বিএসসি’র বহরে ৬টি নতুন জাহাজ যুক্ত হয়েছে। আরো ৪টি নতুন জাহাজ সংযোজনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিএসসি বর্তমানে আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় নিজস্ব অর্থে জাহাজ ক্রয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি আরো বলেন,বিএসসি দীর্ঘদিন পর চট্টগ্রামের কৈবল্যধামে তাদের নিজস্ব জায়গায় আনসার ক্যাম্প ও পাহাড়া চৌকি প্রতিষ্ঠা করেছে। ফলে ১২.৭৭ একর জায়গাটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা যাবে। সেখানে বিএসসির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ জায়গাটি যেহেতু কর্মচারিদের আবাসনের জন্য সরকার কর্তৃক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে; তাই জায়গাটিতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে কর্মচারিদের জন্য আবাসন নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া খুলনার কেডিএ এভিনিউ এলাকায় ১১.৭৩ কাঠা জমির সমস্যা সমাধান করে সেখানে বিএসসির শপিং কমপ্লেক্স উদ্বোধন করা হয়েছে। সেখানে দোকান ভাড়া দিয়ে বর্তমানে মাসিক তিন লাখ টাকা আয় হচ্ছে। খুলনার বয়রা আবাসিক এলাকায় ৪০ কাঠা জমিতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে বাউন্ডারি ওয়াল দেয়া হয়েছে। জায়গাটির বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বিএসসির নীট মুনাফা হয়েছে ২৪৬ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। কর্পোরেশনের উক্ত লাভের উপর ভিত্তি করে এবং শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ বিবেচনা করে পরিচালনা পর্ষদের ৩১৮তম সভায় শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২৫% নগদ লভ্যাংশ (ক্যাশ ডিভিডেন্ড) প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে। আশা করি বিএসসি’র লাভের উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে এ লভ্যাংশের পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল,বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মো. জিয়াউল হক, স্বতন্ত্র পরিচালক প্রফেসর এম শাহজাহান, বিএসসির সদস্য ড. পীযূষ দত্ত, পরিচালক (প্রযুক্তি) মো. ইউসুফ, মোস্তফা জামানুল বাহার প্রমুখ।