সদ্য বিলুপ্ত হওয়া চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কর্ণফুলী থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক (স্থগিত) এসএম মামুন মিয়া বলেছেন, ‘যে কোন সাংবাদিকদের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা আকাশ চুম্বী। সাংবাদিকদের বলা হয় সমাজের ওয়াচডগ। আর সাধারণ মানুষ ওয়াচ করে সাংবাদিকদের। কেনোনা গণমাধ্যম অনুপ্রেরণামূলক। কিন্তু কিছু সংবাদের শিরোনাম দেখে মনে হয় কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিনিয়র নেতাদের উসকানি দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।’
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর জামাল খান প্রেস ক্লাবের সামনে একটি রেস্টুরেন্টে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
১০ মিনিটের ক্ষুদ্র ইন্টারভিউতে এসএম মামুন মিয়া বলেন, ‘সম্প্রতি কর্ণফুলীতে বৈধ অবৈধ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও কর্ণফুলীর ব্যবসা বাণিজ্য বিএনপি নেতার দখলে শীর্ষক সংবাদ গুলো আমার নেতা-কর্মীরা আমাকে পাঠিয়েছেন। আমি খুব মন দিয়ে পড়েছি সে সব সংবাদ। কিন্তু সংবাদের শুরুতেই আমাকে বহিষ্কৃত বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। বরং শোকজের জবাব দিতে পদ স্থগিত রাখা হয়েছে। অলরেডি জবাবও দেওয়া হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘গত কয়েক দিনে কিছু নাম সর্বস্ব সংবাদে প্রচার করা হয়েছে কর্ণফুলী-আনোয়ারা শিল্প এলাকাতে সব ধরনের বৈধ অবৈধ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে নাকি আমি জড়িত। আসলে তা সম্পূর্ণ ভুয়া, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। অনুমান নির্ভর গল্প কাহিনী। যার কোন সত্যতা নেই বলে ইতিমধ্যে যা একটি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও সত্যতা পেয়েছেন।’
কর্ণফুলী উপজেলার এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘যে সংবাদগুলো দৃষ্টিগোচর হয়েছে, তাতে স্পষ্ট ভাবে দেখা গেছে কারো কোন মন্তব্য নেই। একই শব্দের মিশালী। একই ধাঁচের সাজানো গল্প। এতেই পাঠক বুঝে গেছে কেন এসব ভুয়া সংবাদের জন্ম। এটাই সত্য যে, আমি কোন ঘাটের বা কারখানার ব্যবসার সাথে জড়িত না।’
এস এম মামুন আরও বলেন, ‘যে সব ভুয়া সংবাদগুলো আমাকে নিয়ে আজগবি সংবাদ করা প্রচার করেছে, সে সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে জানতে চাইলে এসএম মামুন মিয়া বলেন, ‘গণমাধ্যম গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এই স্তম্ভে ‘রঙ’ ছেঁটে দিচ্ছে কিছু হলুদ সাংবাদিক। যারা সাংবাদিকতাকে কখনো গ্রহণ করেনি। আমরা চাই স্বতন্ত্র সাংবাদিকতা, কাগজের পত্রিকা আর অনলাইন ঘষাঘষি নয়, চাই সঠিক বস্তুনিষ্ঠ তথ্য নির্ভর সংবাদ। যেখানে অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা থাকবে না সাংবাদিকদের।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন,
‘তথ্য প্রযুক্তির যুগে সংবাদ এখন সহজলভ্য। সবার হাতেই স্মার্ট ফোন। যে কেউ প্রযুক্তির সহায়তায় যেকোনো কিছু দ্রুত ছড়িয়ে দিতে পারে সহজেই। বেশির ভাগ মানুষ অনলাইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মিথ্যা সংবাদে সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তা ছাড়া ভিকটিম যদি কোন রাজনৈতিক নেতা হয়, তাহলে নেতার নেতাকর্মীদের মাঝেও বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।’
যাচাই-বাছাই না করে সংবাদ প্রচার বিষয়ে তিনি মন্তব্যে বলেন, ‘তথ্য প্রচার ও বিশ্বাসে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। যেকোনো তথ্য পেলেই তা ভালোভাবে যাচাই না করে বিশ্বাস করা উচিত নয়। শেয়ার করা তো অনেক পরের বিষয়।’
যারা রাজনীতি করেন তাদের বিষয়ে কেন এত ষড়যন্ত্র আর ভুঁইফোড় সংবাদ জানতে চাইলে
মামুন মিয়া বলেন, ‘গিরগিটি রং বদলায় আত্মরক্ষায়, মানুষ রং বদলায় স্বার্থ রক্ষায়। রাজনীতিতেও এই গিরগিটি শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়৷ তবে রাজনীতি যারা করে তাঁদের বিরুদ্ধে ভেতরে বাহিরে শত্রুর অভাব হয় না।’
একজন পাঠক হিসেবে সাধারণ দৃষ্টিতে একটি সংবাদের কখন মৃত্যু ঘটে জানতে চাইলে কর্ণফুলীর এই তুমুল জনপ্রিয় নেতা এস এম মামুন মিয়া বলেন, ‘গুজব, হুজুগ, অলীকতা, বিবেকহীনতা, মূর্খতা, নির্বুদ্ধিতা, অন্যায়, বিচারহীনতা ও সত্য মিথ্যার মিশ্রণে যদি কোন সংবাদ প্রচার করে তখনই সংবাদটি বুদ্ধিদীপ্ত পাঠকের হাতেই মৃত্যু ঘটে।’