বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেছেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও সদিচ্ছা ছাড়া কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। শুধু আইনের কঠোরতা দিয়ে কিশোর গ্যাং সংকট উত্তরণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় । এর নেপথ্যে মদদ-দাতাদের চিহ্নিত করে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে । সাথে সাথে ঢাকা সহ সারা দেশে কিশোর গ্যাং এর উত্থান রোধে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, মিডিয়া, শিক্ষক,শিক্ষার্থী , অভিভাবক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যুগোপৎ ভূমিকা পালন করতে হবে । গড়ে তুলতে হবে আধুনিক শিশু কিশোর বান্ধব সংশোধন বা কারেকশান ব্যবস্থা । গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে এর কারন চিহ্নিত করে তা নির্মূলের ব্যবস্থা নিতে হবে। ”
শনিবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা মহানগরীর তোপখানা রোডস্থ সিরডাপ মিলনায়তনে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দূপূর দূটা পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন বিএইচআরএফ আয়োজিত ‘কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও মিডিয়ার ভূমিকা এবং আমাদের করণীয়’- শীর্ষক এক্সেস টু জাস্টিস প্রোগ্রামের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, খারাপ সংবাদ যেভাবে প্রচার পায়, ভালো সংবাদ সেভাবে প্রচার হয় না। টিকটক, সোশ্যাল মিডিয়ায় সঠিক নজরদারীর দায়িত্ব বিটিআরসির। তারা তা করছে না। রাজনৈতিক উঠতি নেতা পাতি নেতারা টাকা পয়সা দিয়ে কিশোরদের ব্যবহার করে নিজের জনপ্রিয়তা ও পাওয়ার দেখানোর জন্য। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া পুলিশ, বিচারক, প্রশাসন, মিডিয়া কাউকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
বিএইচআরএফ চেয়ারপার্সন মানবাধিকার নেত্রী এডভোকেট এলিনা খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএইচআরএফ মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান, মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদের শিক্ষক ও সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিসের পরিচালক প্রফেসর হাফিজুর রহমান কার্জন, অতিথি হিসেবে আলোচনায় আরো অংশ গ্রহন করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়াম্যান ও এটিএন বাংলার নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরন, সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার পারভেজ আহমেদ ।বিএইচআরএফ ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি রোটারিয়ান এম রাকীব সরদার ও ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন সহ সাধারণ সম্পাদক সাদাত আর খান। সভায় বক্তাগণ বলেন,”‘ সাইবার ওয়ার্ল্ডেও কিশোর গ্যাং এর সরব উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। খেলার মাঠ ও বিনোদনের যায়গা কেড়ে নিয়েছে ছোট্ট একটা এন্ড্রয়েড মোবাইল স্ক্রিন। যা আমাদের সন্তানদের অকর্মা, অসুস্থ মানসিক বিকারগ্রস্ত করে তুলছে।বক্তারা কিশোর গ্যাং এর রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ করতে হবে। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে অংগীকার করতে হবে তারা কোন শিশু কিশোরদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যবহার করবে না ”
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফরেনসিক চিকিৎসক ডা.শাহ আলম, এডিসি ডিএমপি তেঁজগাঁ রুবাইয়াত জামান,এডিসি (প্রশাসন) রকিবুল ইসলাম, ডিআইজি প্রিজন নাহিদা পারভিন,এডিসি ডিএমপি একেএম সাজ্জাদুল আলম,এডিসি সানজিদা চৌধুরী, সূজন সমন্বয়ক দীলিপ কুমার সরকার, বৈশাখী টিভি র সাংবাদিক তানজিনা নিঝুম,সাংবাদিক আরিফুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী তাহমিনা বিনু, এম মাসূম সর্দার, কবি আঞ্জুমান আরা আরজু,টিচার্স ট্রেইনার মুমু আহমেদ,ডা আব্দূস সালাম ওসমানী, এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ হারুন, এডভোকেট অংশু আসিফ পিয়াল, এড, এ এইচ এম জসিম উদ্দিন,এড তাহমিনা সুলতানা, এরশাদ আলম, এডভোকেট আলমগীর মো: ইউনুচ,প্রমূখ সহ বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধি বৃন্দ।
” কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে সভায় পেশকৃত ১৫ দফা সুপারিশমালায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো “জাতীয় শিশু কিশোর অধিকার সূরক্ষা কমিশন ”
গঠনের দাবী করা হয় । এসব সুপারিশমালা বাস্তবায়নের সরকারের উর্দ্ধতন মহলে প্রেরণ করা হবে ।