আজ সোমবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ সোমবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১১ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    রাজনীতির গুণগত মান পরিবর্তন করতে হবে : এস এম জিলানী

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী বলেছেন, দীর্ঘ ১৭টি বছর একটি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের মানুষের হারানো গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার এবং বাক স্বাধীনতা ফিরে পাবার জন্য লড়াই করেছি। শেখ হাসিনা ও তার দোসররা ২০০৭ সালে লগি বৈঠা তান্ডবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতি শুরু করেছিল। তারপরে দেখেছি বিডিআর হত্যাকান্ড, যেখানে ৫৭ জন সেনা অফিসারকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে শেখ হাসিনার উল্লাস আমরা দেখেছিলাম। আমরা দেখেছি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে প্রিয় নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ সাতটি বছর কারাগারের অন্তরালে কিভাবে আবদ্ধ করে রেখেছিল। প্রিয় নেতাকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে অসংখ্য মামলা দিয়ে ফরমায়েসি রায়ের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থান করতে বাধ্য করেছিল। বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মীকে তারা গুম করেছে,খুন করেছে ১৭ টি বছর আমরা দেখেছি। এই ১৭ টি বছর অত্যাচার নির্যাতন গুম খুনের যে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল গত ৫ই আগষ্ট। সেই ৫ই আগষ্টে ছাত্র-জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশ থেকে একটি দীর্ঘ ১৭ বছরের একটি ফ্যাসিবাদকে আমরা হটিয়েছি।

    তিনি আরোও বলেন,আমাদেরকে মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনা হয়তো পালিয়ে গিয়েছে কিন্তু শেখ হাসিনা কিন্তু সবাইকে নিয়ে পালিয়ে যায়নি। স্বৈরাচারের দোসররা আমাদের মাঝে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা প্রতিনিয়ত আপনাদেরকে বিপথগামী করার জন্য প্ররোচনা দিচ্ছে সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। তাদের প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে আমার অনেক সহকর্মীরা তাদের সেই পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা তো দেখলাম সদ্য একটি ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশের মানুষ কিভাবে এদেশ থেকে চিরতরে উৎখাত করেছে। কত ক্ষমতাধর মানুষ আমাদের চোখের সামনে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেল। আমরা দেখেছি বেনজির আহমেদকে তার ক্ষমতার দাপট। তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে বিষাদ মাটির তল থেকে উঠে নিয়ে আসার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছিল। বেনজির আহমেদ হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ দখল করে বিদেশে পাচার করেছে। বেনজির আহমেদ দেশ থেকে পালিয়ে যেখানে পড়ে থাকুক সে কি কোন মানুষের সাথে মিলতে পারবে? বাংলাদেশের কমিউনিটি কারো সাথে সে সম্পর্ক করতে পারবে? জুম্মার নামাজ পড়তে পারবে? অসহায় এক হৃদয় বিদারক যন্ত্রণার মধ্যে বসবাস করছে বেনজির। আমরা হাজার হাজার টাকা লুন্ঠন করে বিদেশে পাচারকারী দরবেশদের পরিণতিও দেখেছি। তাই এই ইতিহাস থেকে আমাদেরকে শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। আমরা যদি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে না পারি আমাদের পরিণতি কি হবে তা সহজে অনুমেয়। আমাদের নেতা তারেক রহমান বারবার আপনাদেরকে আমাদেরকে সতর্ক করছেন। আমাদের রাজনীতির গুণগত মান পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের কোন অপকর্মের দায় প্রিয় অভিভাবক তারেক রহমান এবং দল গ্রহণ করবেনা। আমরা একটি আদর্শে বিশ্বাস করি। সেই দলটাকে সবার উপরে আমাদের স্থান দিতে হবে।

    ২৮ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বিকেলে নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল চট্টগ্রাম মহানগর ও দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে দিকনির্দেশনামূলক যৌথ কর্মীসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

    প্রধান আলোচক এর বক্তব্যে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না, যুবদলের নাম ভাঙিয়ে কোন ধরনের অন্যায় আচরণ করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এবং আগামী দিনেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাই দলের সুনাম ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কর্মকান্ড করা যাবে না। আমাদের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন বাংলাদেশ ছাড়া আমার কোন ঠিকানা নাই। খুনী হাসিনা থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও তাদের লালিত পালিত দোসরসহ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব পর্যন্ত পালিয়ে গেছে। কারণ তাদের অপকর্মের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে তাদের বাধ্য করেছে। আমাদেরকে আগামী দিনে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। ইতিমধ্যেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর রাজনীতিতে পরিবর্তন আনার জন্য কয়েকটি সিদ্ধান্তগ্রহণ করেছেন। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমাদের কাজ করে যেতে হবে।

    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াছিন আলী বলেন, যদি আমরা জনগণের হৃদয়ে অবস্থান করতে পারি জনগণই আমাদের ভালোবেসে ক্ষমতায় বসাবেন। আমরা জিয়াউর রহমানের আমলের বাংলাদেশ গড়তে চাই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলের বাংলাদেশ গড়তে চাই।
    একটি সুশৃঙ্খল ও সুন্দর বাংলাদেশ গঠন করার জন্য দেশনায়ক তারেক রহমান দিনরাত পরিশ্রম করছেন। দেশনায়ক তারেক রহমান এর সৈনিক হিসেবে আপনাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু রাফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে আমাদের সবাইকে সম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সকল দল-মত, জাতি-ধর্ম সকলের সমান সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসররা বিভিন্নভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত আছে। ছাত্রদলকে সর্বদা সজাগ থেকে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে ওয়াসিম, রাব্বি ও তানভীর সহ অনেকে শহীদ হয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগকে সম্মানিত করতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ছাত্রদলকে কঠোর কর্মসূচি নিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্যাসিবাদের কোলে লালিত হওয়া সন্ত্রাসীদের উৎখাত করতে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি আন্দোলন ব্যর্থ হতো তাহলে ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলের শিকার হতো ছাত্রদল তথা বিএনপি। ছাত্রদল গত ষোল বছর ধরে ফ্যাসিবাদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে বজ্র কন্ঠে আওয়াজ তুলেছিল হাসিনা তুই স্বৈরাচার। জিয়া পরিবারের বিশ্বস্থ ভ্যানগার্ড জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ছাত্রদল সর্বদা গণতন্ত্রের ঢাল হিসেবে সবসময় রাজপথে ছিল। আগামীতেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। নিজে সৎ থাকলে আমরা জনগণের মাঝে সততা প্রতিষ্ঠা করতে পারব। ইনশাআল্লাহ।

    কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান এর সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াছিন আলী, সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহজাহান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মনজুর আলম তালুকদার, সদস্য সচিব জমির উদ্দিন মানিক, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক রবিউল ইসলাম রবি, সদস্য সচিব কামরুদ্দিন সবুজ।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print

    সর্বাধিক পঠিত

    আমাদের ফেসবুক

    আমাদের ইউটিউব