
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রেল স্টেশন সংলগ্ন দোকান দখলকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এরমধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, গতরাত সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের পরিচালিত একটি দোকান দখল করতে আসে হাটহাজারী উপজেলার যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ হানাফের নেতাকর্মীরা। এ সময়ে শিক্ষার্থীরা উপস্থিতি থাকায় তাদের উপর ককটেল বিস্ফরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। পরে ক্যাম্পাসে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে জোড় হন এবং রেল ক্রসিংয়ের দিকে হামলার প্রতিবাদে মিছিল নিয়ে গেলে আবার শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফরণ ও গুলি বর্ষণ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময়ে তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী ওবায়দুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী রেল স্টেশন সংলগ্ন আপ্যায়ণ ঘর নামে একটি দোকান পরিচালনা করত। গত রাত সাড়ে ৩টাট দিকে এই দোকানটি দখল করতে আসে যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময়ে তারা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। এতে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমরা সকালে রেল ক্রসিংয়ের দিকে মিছিল নিয়ে গেলে তারা আবার আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা এ সময়ে পুলিশ বারবার ফোন করেছি কিন্তু পুলিশ তেমন সহযোগিতা করেনি।
পাঁচজন আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে চবি মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ডা. আবু তৈয়র বলেন, আমাদের এখানে পাঁচজন চিকিৎসা নিতে এসেছে। আমরা তাদের মধ্যে চারজনকে চিকিৎসা দিয়ে হলে পাঠিয়েছি। আরেকজনের অবস্থা কিছুটা খারাপ হওয়া চমেকে পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, স্থানীয় দুই ব্যাবসায়ীর দ্বন্দ্বে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফরণ করেন৷ এ সময়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা হল থেকে বের হয়ে রেল ক্রসিংয়ের গেলে দিকে গেলে তারা আবার ককটেল বিস্ফরণ করেন। এ সময়ে পুলিশলের সহযোগিতা তেমন পায়নি।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট রাতে রেলক্রসিং এলাকায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছিল যুবলীগ নেতা হানিফ ও তার অনুসারীরা। সেসময় দর্শন বিভাগের শিক্ষক মোজাম্মেল স্যারের গাড়ীতেও হামলা করে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে সবগুলো দোকানের ভাড়া নেয় হানিফ। এ ছাড়া তার ছোটোভাই ছাত্রলীগ নেতা মো. ইকবাল পুরো ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় ডিসের লাইন এবং ওয়াইফাইয়ের ব্যবসা করে।
নিম্নমানের ইন্টারনেট দিয়ে দীর্ঘদিন এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যকাউকে তারা এখানে ব্রডব্যান্ডের ব্যবসাও করতে দেয় না। এমনকি শিক্ষার্থীরা তাদের এসব সমস্যা নিয়ে মুখ খুললে হুমকিধামকি ও গুপ্ত হামলা চালায় হানিফ বাহিনী।