বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা দীর্ঘ এক যুগ পর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে। এতে প্রায় দেড় হাজার নবীন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেইট সংলগ্ন এ.জে কনভেনশন হলে আয়োজিত হয় এই অনুষ্ঠান।
চবি শাখার শিক্ষা এবং এইচআরএম সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এবং চবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিমের উদ্বোধনী বক্তব্যে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্ল্যানিং ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. ওসামা রায়হান এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী, ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী এবং চবি শাখা ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন,গত ১৫ বছরে ইসলামি ছাত্রশিবিরকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রশিবির সম্পর্কে জানতে পারেনি। দেশব্যাপী একধরণের ভয়ের সংস্কৃতি ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো শিক্ষার্থীকে জোর জবরদস্তি করে বলি না যে ছাত্রশিবির করতে হবে। সকলে দলে দলে এসে শিবিরে যোগ দিবে আমরা এমনটাও চাই না। আমরা চাই একজন মানুষ হিসেবে আপনারা নীতিনৈতিকতা, দেশপ্রেম ও ইসলামি মূল্যবোধ বজায় রাখেন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো কাজ করতে আমরা অন্যান্য সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা সকলকেই বলবো আপনারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো ভালো ও শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করেন।
চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. বরকত আলী বলেন, মানুষ হলো একটা সামাজিক জীব, যারা অন্যের অধিকার ক্ষুন্ন করে না, অন্য মানুষকে হত্যা করে না। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমরা মানুষ হলেও আমাদের মধ্যে পশুত্বের ভাব রয়েছে। এই পশুত্ব দূর করতে আল্লাহ তায়ালা একটি মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করেছেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের ৫ টি বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। এগুলো হলো চরিত্র, সৃজনশীলতা, যোগাযোগ, সক্ষমতা ও সাহস।
কিন্তু, আজকে আমরা সমাজ ও দেশে নেতৃত্ব দিতে পারিনা। কারণ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক নেই। নেতৃত্ব, জ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা কম হয়। আজ চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষ, যোগ্য ও সক্ষম নাগরিক হিসেবে তৈরি করে তুলছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের অন্তর্চক্ষুকে বাড়াতে হবে। কারণ বিপ্লব করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম বলেন, যাদের আত্মত্যাগে আমরা বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা আজ তাদের স্মরণ করছি। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখবো। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে আগেও সচেতন ছিলাম, আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব একটা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলবো। আগামীর বিশ্ববিদ্যালয় হবে মাদক ও অস্ত্র মুক্ত।
অনুষ্ঠানে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন করেন দুর্নিবার শিল্পীগোষ্ঠী।