আজ শুক্রবার ║ ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ শুক্রবার ║ ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

রেলওয়ে জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের অন্যরকম এক সমুদ্র বিলাস কক্সবাজারে

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter

রেলওয়ে জার্নালিস্ট এ্যসোসিয়েশন (আরজেএ) আয়োজিত বার্ষিক বনভোজন উপলক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে (কক্সবাজার) নবীন-প্রবীণ সাংবাদিকদের উপস্থিতি, যেন মিলন মেলায় রুপান্তরিত হয়েছে। কক্সবাজারের পাটোয়ার টেক সী বিচ, কলাতলী সী বিচ, লাভনী পয়েন্ট সী বিচ, সুগন্ধা বিচ ও ইনানী বিচসহ বিভিন্ন পয়েন্টে দুদিনব্যাপী উৎসবে মাতিয়েছেন বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত একঝাঁক পেশাদার সাংবাদিক।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, দৈনিক সকালের সময়’র চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান এস এম পিন্টুর নেতৃত্বে গত ৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে নগরীর টাইগারপাস থেকে পিকনিক স্পটের উদ্দেশে আরজেএ’র সদস্যদের নিয়ে প্রথম গাড়িটি কক্সবাজারের উদ্দ্যেশে রওনা হয়। ঠিক ২৫ মিনিট পরে নগরীর মুরাদপুর থেকে দ্বিতীয় গাড়িটি পিকনিক স্পটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।

আরজেএ লঘু সম্বলিত সাদা টি-শার্ট পড়ে গল্প,কবিতা, গান আর আড্ডায় দুটি গাড়ি মাতিয়ে রাখেন সংগঠনের সদস্যরা। তবে প্রতিটি আনন্দঘন মুহুর্তে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলমকে মিস করেছে বনভোজন আয়োজন কমিটি ও সদস্যগণ। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বনভোজনের গাড়ি দুটি থামেন চকরিয়ায়। প্রথম বিরতি। হাল্কা নাস্তা, ফটোসেশন আর ৩০ মিনিটের আড্ডা শেষে গাড়ি দুটি ফের ছুটে চলে পিকনিক স্পটের দিকে।


বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পৌঁছে যায় গন্তব্যে। এরপর ওয়াল্ডবিচ রিসোর্টে যার যার কক্ষ বুঝে নেন বার্ষিক বনভোজনে অংশ নেওয়া আরজেএ’র সদস্যগণ। ফ্রেশ হয়ে দুপুর দেড়টার সময় মধ্যাহ্নভোজের জন্য সাংবাদিকরা আবারও মিলিত হন তারকামানের একটি হোটেলে। খাবারের মেন্যু হিসেবে পছন্দের তালিকায় ছিল হরেক রকমের মজাদার ভোজ, যার যার পছন্দ অনুযায়ী মেনু নির্বাচন ।

খাওয়া দাওয়ার পালা শেষ। এবার দর্শনীয় স্থান পরিদর্শণের পালা। দুটো গাড়ি প্রথমে ছুটে চলে বাংলাদেশের প্রথম আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের দিকে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গাড়ি দুটি এসে থামেন কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে। সাংবাদিকরা দল বেঁধে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কক্সবাজার জেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়ায় অবস্থিত ছয়তলা বিশিষ্ট রেলওয়ে স্টেশনটি ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং যে যার মতো করে সংবাদ প্রকাশের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে ও ফটোসেশন করে স্মৃতিগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করেন।

এরমধ্যেই সময় হয়ে এসেছে সূর্যাস্তের। পশ্চিম আকাশে সূর্য লাল আভা ছড়িয়ে ডুব দেওয়ার মুহূর্তটি যেন মিস না হয় সেজন্য আবারও গাড়ি দুটি ছুটলো বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। ১৫ মিনিটের মধ্যেই পৌছে যায় গন্তব্যে।

এরপর বৈকালিক নাস্তা শেষে বালিপথ মাড়িয়ে সৈকতের কাছে এসে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনে ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে আনন্দ উল্লাসে সময় কাটান গণমাধ্যমকর্মীরা।

এক ঝাঁক পেশাদার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সৈকতও যেন প্রাণ ফিরে পায়। বনভোজন স্পটে ছোটছোট বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে কিছু সময় ঘুরাঘুরি এবং ফটোসেশান করেন আরজেএ’র সদস্যরা।

এসময় তাঁরা আগত পর্যটক, কর্তৃপক্ষ ও সৈকতে দায়িত্বরত প্রশাসনের সাথে কথা বলে নিউজের জন্য ছবি তোলে, ভিডিও ধারণ করে এবং বিভিন্ন তথ্যাদী সংগ্রহ করে মোবাইলে সংরক্ষণ করেন।

পিকনিক স্পটে পৌঁছে সাংবাদিকরা মেতে ওঠে নানান আনন্দ আয়োজনে। কেউ কেউ মজেছেন নানা পদের খাবার-দাবারে। এক পর্যায়ে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। সকলে ফিরে যায় হোটেলে। কিছুটা বিশ্রাম শেষে কক্সবাজারের বিখ্যাত আল গণি রেস্তোঁরায় ডিনার সেরে প্রথমদিনের আনন্দ আয়োজনের ইতি টানেন পিকনিক আয়োজক কমিটি।

পরদিন বুধবার (৮ জানুয়ারি) ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল সাড়ে ৯টা। তখন সবাই প্রস্তুত। এরমধ্যেই পিকনিক আয়োজন কমিটি বনভোজনে অংশগ্রহণ করা সকল সদস্যদের হাতে তুলে দেন চমৎকার উপহার। এরপর সকালের নাস্তা সেরে সৈকতের অন্যতম দর্শনীয় স্থান ইনানির উদ্দ্যেশে রওনা হয় রেলওয়ে জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের বহনকারী গাড়ি দুটি।

মেরিন ড্রাইভ রোড ধরে চলছে। দরিয়া নগর, হিমছড়ি ঝর্ণা ও পাহাড় ও ইনানী র‍য়েল রিসোর্টসহ বিভিন্ন পিকনিক স্পটেই মাঝে মাঝে থামছে গাড়ি। ঘুরে ঘুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাংবাদিকগণ। কেউ কেউ দলবেঁধে পিকনিক স্পটের সীমানা পেরিয়ে চলে যাচ্ছেন সৈকতে। ঘোরাঘুরির সঙ্গে চলতে থাকে সেলফিও।

সিনিয়ররা জড়ো হয়ে মেতে উঠেছেন খোশগল্পে। তাদের আড্ডায় পারিবারিক বিষয়ের সঙ্গে পেশাজীবনের বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা উঠে আসছে আড্ডায়। আবার কেউ কেউ বয়সকে দূরে ঠেলে মেতে ওঠেছেন কৈশোরের দুরন্তপনায়।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে কক্সবাজার সৈকতের পাটুয়ার টেক পিকনিক স্পটের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতেই বনভোজনের সংক্ষিপ্ত অনুভুতি প্রকাশ করেন আরজেএ’র সদস্যরা। সংগঠনের সদস্য প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার আশিক আরেফিন ও সিএইচডি অনলাইন পোর্টালের মুন্নার সঞ্চলনায় প্রথমে অনুভুতি প্রকাশ করেন আরজেএ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম পিন্টু।

এরপর একে একে অনুভুতি প্রকাশ করেন জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক কামাল পারভেজ, মো. জাহাঙ্গীর আলম, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের আব্দুল মতিন চৌধুরী রিপন, দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার রাজীব সেন প্রিন্স, আমাদের নতুন সময়ের এম আর আমিন, দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের মোস্তাফা জাহেদ, সরেজমিন বার্তার গাজী লিটন, দৈনিক সাঙ্গুর জাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ টুডের মাজহার রানা, আরাফাত কাদের, রাকিব উদ্দিন, আবুল হাসনাত মিনহাজ, আব্দুল আউয়াল মুন্না, মিনহাজ প্রমূখ।

সমুদ্র বিলাস যাত্রায় সঙ্গী ছিলেন সংগঠনের সদস্য ও দৈনিক সংগ্রামের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান নুরুল আমিন মিন্টু, নয়া দিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার ওমর ফারুক।

সবশেষে ফের সমুদ্র সৈকত দর্শণ করে কক্সবাজার সদরের লালদিঘী পাড় এলাকার বার্মিজ মার্কেটে জড়ো হয় সাংবাদিকগণ। পরিবার পরিজন ও প্রিয়জনের জন্য কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী আচার, বাদাম ও শালসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ক্রয় করেন যে যার মতো করে। রাত পৌণে ৮টার দিকে কক্সবাজার ছাড়েন সাংবাদিকদের বহনকারী গাড়ি। রাত সোয়া ১০টায় সংগঠনের সদস্যদের সৌজন্যে লোহাগাড়ায় হালাল ডাইন রেস্টুরেন্টের ভিআইপি চাইনিজ হলে ডিনার পার্টির আয়োজনে করেছের দৈনিক সকালের সময়ের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি শাহেদ ফেরদৌস হিরু ও লোহাগাড়া প্রতিনিধি মুজাহিদ হোছািন সাগর। ডিনার সেরে মধ্যরাতে চট্টগ্রাম শহরের এসে পৌছায় পিকনিকের গাড়ি বহর। এভাবেই রেলওয়ে জার্নালিস্ট এ্যসোসিয়েশনের বনভোজন-২০২৫ সফলতার সাথেই সম্পন্ন হয়।
এবারের সমুদ্র বিলাস যাত্রায় সংগঠনের প্রত্যেক সদস্যদের জন্য স্পন্সর হিসেবে ল্যাপটপ ব্যাগ উপহার দিয়েছেন দুরন্ত বাজার সুপারশপ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on linkedin
Share on telegram
Share on skype
Share on pinterest
Share on email
Share on print

সর্বাধিক পঠিত

আমাদের ফেসবুক

আমাদের ইউটিউব

সর্বশেষ খবর