তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে এখন ইঁদুরের গর্তে ঢুকেছে। তাদের নেতারা গর্তের মধ্য থেকে একটু একটু করে তাকিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে। এখন যারা গাড়িতে চোরাগুপ্তা হামলা চালায়, মানুষের উপর হামলা চালায়, স্কুল-ঘর পুড়িয়ে দেয়, জীবন্ত ৩২জন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা সাংবাদিকের বেশ পড়ে গাড়িতে আগুণ দিতে যায়। এই রাষ্ট্র-সমাজ ও সাংবাদিকদের শত্রু বিএনপি, এদের প্রতিহত করতে হবে। এরা মানবতারও শত্রু।
তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালে দেশকে ধ্বংস করার জন্য বায়তুল মোকাররমে আগুন দেয়া হয়েছিল, পবিত্র কোরআনে আগুন ও শত শত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সাড়ে তিন হাজার গাড়ি ও বহু ট্রেন-লঞ্চে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। শতাধিক ড্রাইভারকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে বিএনপি-জামাত। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই অগ্নিসন্ত্রাসকে মোকাবেলা করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছি। ১৮ সালেও সেই চেষ্টা হয়েছিল, যারা সেই চেষ্টা করেছিল তারা সফল হয়নি। এবারও দেশের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, এখনও হচ্ছে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাপ্তাহিক ‘চাঁটগার সংবাদ’ পত্রিকার ১১তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে যে দেশটা বদলে গেলো, গত ১৫ বছরে মানুষের মাথাপিছু আয় ৬শ’ ডলার থেকে ১৫ শ’ ডলার ছুঁই ছুঁই, সেই জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। মানব উন্নয়ন, সামাজিক, অর্থনৈতিক সহ সমস্ত সূচকে আমরা যে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি, পাকিস্তান যে আজকে আমাদের দিকে তাকিয়ে হায় হুতাশ করে, বাংলাদেশ কীভাবে তাদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলো। আমরা মানব উন্নয়ন, সামাজিক ও স্বাস্থ্য সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলেছি, এমনকি মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ভারতকে আমরা অতিক্রম করেছি, সেই সত্যটা তো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতে হবে।
তিনি বলেন, ঝড়, বন্যা জ¦লোচ্ছাসের দেশ, জলবায়ুর পরিবর্তন যেখানে নিত্যসঙ্গী, সে দেশে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের চেয়ে কৃষি জমি কম, সে দেশে যে সমস্ত প্রতিকুলতা ও প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে যে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলো সেই গল্পটাও গুমাধ্যমে আসা দরকার।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল মানুষ স্বপ্নেও ভাবেনি। কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন যাবে, মানুষ গল্প ও কেচ্ছা শুনেছে। ১৩৩ বছর আগে ব্রিটিশ আমলে পরিকল্পনা হয়েছিল। যখন আমরা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি তখনও মানুষ ভেবেছে এটি আগের মতোই মন ভুলানো গল্প। ট্রেন যে কক্সবাজার যাবে সেটা ভাবেনি। আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকে ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার যাবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হয়েছে। আকাশ থেকে শহর চেনা যায় না, পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের গ্রাম আর খুঁজে পাওয়া যায় না, এটি এখন বাস্তবতা। গরু দিয়ে হালচাষ করা এখন আমাদের কবিতায় আছে গল্পে, কিন্তু বাস্তবে সেটি আর নেই। গত দশ বছরে কৃষির যে যান্ত্রিকিকরণ হয়েছে সেটি অভাবনীয়। মানুষ গরু বা মহিষ দিয়ে এখন কদাচিৎ চাষ করে। মেশিনের একদিক দিয়ে ধান কাটা হয় আরেক দিক দিয়ে বের হয়। এগুলো আগে আমরা সিনেমায় দেখেছি, অন্য দেশের ডক্যুমেন্টারিতে দেখেছি, এখন এটি বাংলাদেশেও হচ্ছে। এ নিয়ে পত্রিকায় ফিচার দেখি না।
সাপ্তাহিক চাটগাঁর সংবাদ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাবেক রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম , চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, আমীর উদ্দিন চৌধুরী, প্রফেসর মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর শিক্ষক প্রফেসর মইনুল ইসলাম, খায়রুল এনাম সুজন বক্তব্য রাখেন।