এম ই এস কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক ভিপি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ পাঠাগার সম্পাদক শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিনের ১৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল বুধবার (২৯ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। হযরত খাজা গরিব উল্লাহ শাহ মাজার প্রাঙ্গনে শহীদ মহিম উদ্দিনের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং নগরীর স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে শহীদ মহিম উদ্দিন স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওমরগণি এম.ই এস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক জিএস ও নগর আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সভাপতিত্বে এবং নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম.আর আজিম ও নগর যুবলীগ সহ সভাপতি নুরুল আনোয়ারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.টি.এম পেয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব মো: শফর আলী, মুক্তিযোদ্ধা বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধা মো: ইউনুছ, নগর যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক সাংসদ মহিউদ্দিন বাচ্চু, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড.ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী ,তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, শহীদ মহিম উদ্দিনের ভাই ও প্যানেল মেয়র এম গিয়াস উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন, এম ই এস কলেজের সাবেক ভি.পি মোহাম্মদ ইউনূস, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল হক সুমন, এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মিথুন বড়ুয়া, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মনসুর, সাইফুল আলম বাবু, শ্রমিক লীগ নেতা আবুল হোসেন আবু, এম ই এস কলেজ ছাত্রসংসদ ভিপি ও কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, নগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ার আলম নোবেল, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, সহ সভাপতি ইয়াছির আরাফাত কচি প্রমুখ। এতে কাউন্সিলরবৃন্দ, নগর ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ সহ সাবেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘২০০৪ সালে বিএনপি-জামাত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে তারেক জিয়া ও হাওয়া ভবনের নির্দেশে আওয়ামী লীগ তথা যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দদেরকে হত্যার মাধ্যমে যে নীল নক্সা প্রণয়ন করেছিল তারই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীর শিকার শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিন মহিম। আজকের সভায় এই বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা এবং তারেক জিয়াকে দেশে এনে সর্বোচ্চ শান্তির দাবি জানান।’
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিন তৎকালীন বিএনপি জামাত সরকারের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের যুব ও ছাত্র রাজনীতিকে সংগঠিত করেছিল বিধায় তারেক জিয়া ও হাওয়া ভবনের নির্দেশে শহীদ ছাত্রনেতা মহিমকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। আমরা বিচার বহিভূত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিনের নামে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি রাস্তার নামকরণ করা হবে বলে ঘোষণা প্রদান করছি। ‘
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিন ছিলেন তৎকালীন সময়ের একজন সাহসী ছাত্রনেতা। তৎকালীন বিএনপি জামাত সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার দোসর তারেক রহমানের রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিনকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াস চালিয়েছিল। কিন্তু শহীদ ছাত্রনেতা মহিমের অনুসারীরা তারেক জিয়ার এই হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল এবং জোট সরকারের পতন ঘটিয়েছিল। আমি এই বিচার বহিভূত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং তারেক বাহিনীর যারা এই ঘটনায় জড়িত ছিল তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি এবং শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিনের কৃতিত্ব তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমে অব্যাহত থাকবে।’
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.টি.এম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে মেধাশূন্য করতে গিয়ে জনপ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা মহিম উদ্দিন মহিমকে হত্যা করেছিল। ৭৫’র আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিন মহিম এর হত্যা একই সূত্রে গাঁথা। এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
সাবেক সাংসদ মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গঠন প্রণালী এবং ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী একটি সংগঠন। যার ভীত রচিত হয় মহিম উদ্দিনের মত ছাত্রনেতাদের মাধ্যমে। তাই দেশ বিরোধী শক্তি বিএনপি জামাত এই হত্যায় মেতেছিল। যা ইতিহাসে অত্যন্ত ঘৃণিত হয়ে থাকবে।’
শহীদ ছাত্রনেতা মহিমের বড় ভাই প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘আওয়ামী রাজনীতির জন্য মহিম সব সময় নিবেদিত ছিল, তার সাহস আর মেধার কারণে সেই বিএনপি -জামাতের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিল। তাই তারেক বাহিনীর মাধ্যমে নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হয়। আজ ১৯ বছর ধরে আমার পরিবার এই শোক বয়ে বেড়াচ্ছে।’
সভাপতির বক্তব্যে এম ই এস কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক জিএস, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর বলেন, ‘মেধায় এবং সাহসিকতায় শহীদ ছাত্রনেতা মহিম উদ্দিন মহিম ছিলেন তৎকালীন সময়ে সবার মাঝে অনন্য। সে আমার প্রিয় বন্ধুও। তৎকালীন সরকারের কালো বাহিনীর মাধ্যমে শহীদ ছাত্রনেতা মহিমকে নৃশংসভাবে খুন করে তৎকালীন যুব ও ছাত্রনেতাদের দাবিয়ে রাখতে চেয়েছিল। তারা প্রমাণ করেতে চেয়েছিল যে, তাদের হাতে রাজনীতি জিম্মি করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু শহীদ ছাত্রনেতা মহিমের এই ত্যাগকে সামনে রেখে আমরা নতুনভাবে বলীয়ান হয়ে এই চট্টগ্রাম মাটিতে তাদের পরাজয় নিশ্চিত করেছি।’
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম বলেন, ‘মহিমের এই ত্যাগ আমাদের শক্তিতে পরিনত হয়েছে। যখনই অপশক্তি সামনে আসবে আমরা এই শোককে শক্তিতে পরিনত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।’