আজ সোমবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ সোমবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১১ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    সংখ্যালঘু কার্ড নিয়ে আওয়ামী লীগকে খেলতে দেয়া হবেনা:গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

    সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির হাটহাজারী: মীর হেলাল

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    ১৯৭৩ সালে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে শেখ মুজিবের নির্দেশে বুলডুজার দিয়ে রমনা কালী মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেকমন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী শ্রী শ্রী পুন্ডরীকধামে রাধাষ্টমীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সেই সঙ্গে সংখ্যালঘু কার্ড ব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে কোনো খেলতে দেওয়া হবে না বলেও হুশিয়ারি প্রদান করেন তিনি।

    গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে বিভাজনের রাজনীতি। তারা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বিভাজনের মাধ্যমে সব সময় দেশে অস্থিতিশীল করে রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু হিন্দুদের সবচেয়ে ক্ষতি আওয়ামী লীগই করেছে। শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালের ৩ মার্চ সেহারাওয়ার্দী উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধনের কথা বলে রমনা মন্দির গুড়িয়ে দিয়েছিল। আমি এটি শতভাগ সত্য কথা বলছি। এই বিষয় নিয়ে আমি চ্যালেঞ্জ করতে পারবো। দেশ থেকে গত ১৫ বছরে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করা হলো। কার টাকা পাচার করা হলো? আমার আপনার টাকা পাচার করা হলো। কারা করলো? সব অপরাধের শাস্তি তাদের পেতে হবে। বিচার এই বাংলাদেশের মটিতে হবে।

    তিনি বলেন, ছাত্র জনতাকে পাখির মতো গুলি করে মারা হয়েছে। গত ১৫ বছর মানুষ কথা বলতে পারেনি, ভোট দিতে পারেনি। সবকিছু একটি দল এবং একটি পরিবার কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী আওয়ামী লীগের কাউকে মারা হয়েছে? তারা সাধারণ মানুষের ভয়ে পালিয়ে গিয়েছে। কারণ তাদের রাজনীতি ছিল জনগণের বিরুদ্ধে এবং শোষণের রাজনীতি। আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরা ভয় পাই না। আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করি। গত ১৫ বছর কত মামলা, কত নির্যঅতন করা হলো। বিএনপি নেতাকর্মীরা কষ্ট করে তাদের আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এদেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। এটিই হচ্ছে দেশ ও জনগণের প্রতি বিএনপির কমিটমেন্ট। আমার বাড়িতে হামলা হয়েছিল আওয়ামী লীগের সময়। থানায় যাওয়া হলো মামলা করতে। পুলিশ মামলা নেয়নি। কারণ কি? কারণ হচ্ছে হিন্দু হয়ে আমি কেন বিএনপি করি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন বলে তিনি এত বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু একটি দলের নেত্রী জনরোষে পালিয়ে যেতে হয়েছে।

    অনুষ্ঠানের উদ্বোধক বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির হাটহাজারী। এখানে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব ধর্মের মানুষ নিরাপদে নির্ভীকচিত্তে নিজ নিজ ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান পালন করছেন। সব ধর্মের মানুষের মেলবন্ধনে আমাদের মধ্যে চমৎকার ধর্মীয় সম্প্রীতি বিরাজ করছে। বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় নানা ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা-হাঙ্গামা হলেও এ এলাকার মানুষ শত বছর ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে চলছেন নিখুঁতভাবে। এখানেই একশ বছরের বেশি সময় আগে গড়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী হাটহাজারী মাদ্রাসার জামে মসজিদ (বড় মসজিদ) এবং ‘শ্রী শ্রী সীতাকালী কেন্দ্রীয় মন্দির’। এক দেয়ালের এক পাশে মসজিদ থেকে প্রতিদিন ভেসে আসছে আজানের ধ্বনি। পাশের মন্দিরেও নিয়ম করে বেজে উঠছে উলুধ্বনি। কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ নেই।

    মীর হেলাল আরো বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা শান্তিপ্রিয় হাটহাজারীতে বারবার ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছিল কিন্তু হাটহাজারীর সচেতন জনতা ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও দিবে না। আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন, “বাংলাদেশের মানচিত্রে ঠিকানা আমাদের যেখানেই হোক পরিচয় একটাই, আমরা সবাই বাংলাদেশী”। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

    সাংবাদিক বিপ্লব পার্থ ও প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাসের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন পু-রীক বিদ্যানিধি স্মৃতি সংসদের সহ সভাপতি স্বপন চৌধুরী। উদ্বোধক ছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পু-রীক বিদ্যানিধি স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার অশোক কুমার নাথ। আর্শীবাদক ছিলেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের প্রতিনিধি শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণব্রতানন্দ মহারাজ, শ্রীমৎ পুলকানন্দ। প্রধান বক্তা ছিলেন পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তী,হাটহাজারী বিএনপির সদস্য সচিব গিয়াস উদ্দিন চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের যুগ্ম মহাসচিব আর কে দাশ রুপু, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সংসদের সদস্য সচিব উজ্জ্বল বরণ বিশ্বাস, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সংসদের সদস্য সচিব জুয়েল চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সদস্য সচিব বাপ্পী দে, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ক্রীস্টান ঐক্য পরিষদ হাটহাজারী শাখার সভাপতি গৌবিন্দ প্রসাদ মহাজন।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print

    সর্বাধিক পঠিত

    আমাদের ফেসবুক

    আমাদের ইউটিউব