হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধি সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করেন দীর্ঘদিন ধরে নাগরিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক সুজন।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে খুচরা বাজারে মোটা এবং চিকন চালের দাম প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যার ফলে অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে গিয়ে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। চালের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে পাইকারি বিক্রেতারা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন এবং দাম বৃদ্ধির জন্য পরিবহন খরচকে দায়ী করছেন। আবার ধান ও চাল মজুদ করে মিলাররা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ পাইকারদের। অন্যদিকে মিলারদের অভিযোগ বড় ব্যবসায়ী এবং পাইকারি বিক্রেতারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের দাম বৃদ্ধি করছে। এভাবে দোষারোপের সংস্কৃতিতে পড়ে সাধারণ মানুষের জনজীবনে অস্বস্তি বিরাজ করছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় সরকার গত মাসে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার পরও বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। সুতরাং নিশ্চিতভাবে বলতে পারি বর্তমান সরকার বিভিন্ন উপায়ে চালের দামসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করলেও কতিপয় লোভী সিন্ডিকেটের কারণে জনগন এসব সুফলগুলো প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও মনে করেন তিনি। সুজন আরো বলেন, বর্তমান সরকার সারা বছরব্যাপী নানাবিধ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে স্বল্প আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যাহা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু কতিপয় ষড়যন্ত্রকারীরা অযথা বিভিন্ন ছুতোয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসময় হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধি সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র বলেও মনে করেন তিনি। তিনি মনে করেন সরকার বিরোধী বিভিন্ন পাইকার এবং মিলাররা পরিকল্পিতভাবে একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এখন তারা চালের দাম বৃদ্ধি করেছে, কয়দিন পর হয়তো তারা আবার অন্য কোন পণ্যের দাম বৃদ্ধি করবে। যাতে সাধারণ ভোক্তাদের মনে সরকার বিরোধী একটা অবস্থান সৃষ্টি করা যায়। তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর থেকে দাম বাড়ানোর প্রবণতা আরো বাড়তে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন তিনি। খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে হঠাৎ করে পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এখন থেকেই এ ব্যাপারে কঠোর নজরদারি করারও আহবান জানান তিনি। এছাড়া দাম বৃদ্ধির প্রবণতাকে রুখতে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনের ম্যাজিষ্ট্রেটসহ ভ্রাম্যমান আদালতকে একযোগে কাজ করার অনুরোধ জানান তিনি। কোন অবস্থাতেই মজুতদারীরা যাতে কোন পণ্য মজুত করতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানান তিনি। পাড়ায় মহল্লায় নাগরিক উদ্যোগের কর্মীদের এসব বিষয়ে খবর রাখারও আহবান জানান তিনি। এ বিষয়ে কোন সংবাদ পেলে জনগনকে সাথে সাথে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকারসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর নিকট জানানোর আহবান জানান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।