আজ বুধবার ║ ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ বুধবার ║ ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ║২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    দীর্ঘ জীবন নয়, কর্মমুখর যৌবন চাই

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    যৌবন মানব জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। মানুষ তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর বেশির ভাগ যৌবনেই নিয়ে থাকে। মানুষের জীবনে যৌবন নানামুখী প্রতিকূলতা নিয়ে হাজির হয় সত্যি,আবার এসব প্রতিকূলতা কিংবা চ্যালেঞ্জ জয় করেই মানুষ সফলতার দিকে ছুটে বেড়ায় যৌবনের দুরন্ত সময়ে।

    যৌবন মানুষের জীবনে নিয়ে আসে অদম্য প্রাণ শক্তি। যে শক্তির প্রভাবে মানুষ খুঁজে পায় বিশ্বজয়ের ইস্পাত দৃঢ় মনোবল, দুর্বার গতিতে ছুটে চলার প্রেরণা, সত্য -সুন্দর আর আলোকের পথে চলার নির্মল আনন্দ। ঝঞ্ঝাট,বিপদ সংকুল পথ মাড়িয়ে ধূমকেতুর মত আবির্ভূত হয়ে পৃথিবীকে পরিবর্তন করে দেওয়ার মতো কৌতূহল মাথায় চেপে বসে এই সময়। তাইতো পৃথিবীর সব স্মরণীয় কিংবা ইতিহাস সৃষ্টকারী ঘটনায় তরুণ -যুবাদের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা।

    পৃথিবীর কোন শক্তির কাছে মাথা নত না করে বীরদর্পে ছুটে চলে যুবকেরা। নিজেদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে সৃষ্টি করে ইতিহাস। পৃথিবীর কোন যুদ্ধ, বিপ্লব, বিদ্রোহ জয় করা সম্ভব হয়নি যুবকদের অংশগ্রহণ ছাড়া। পৃথিবীর দেশে দেশে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিপ্লব বা পরিবর্তন সাধনে যুবসমাজই ছিল প্রধান নিয়ামক শক্তি। বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, স্বাধীনতা আন্দোলন ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

    যেকোন সমাজ বিনির্মাণে যুবসমাজের অবদান অনস্বীকার্য, যুবসমাজের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, অমিত তেজ ও সাহস, কর্মস্পৃহা ও কর্মক্ষমতা দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পৃথিবীর কাল পরিক্রমায় যুবসমাজই এনেছে পরিবর্তনের নতুন ধারা, তাই তো কবি হেলাল হাফিজ লিখেছেন ” এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।

    বাংলাদেশের রয়েছে অমিত সম্ভাবনাময় বিশাল যুবসমাজ। জাতিসংঘের মতে যুব সম্প্রদায় হলো ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীরা আর বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতি অনুযায়ী ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীরা যুব সম্প্রদায়। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক -তৃতীয়াংশ যুবসম্প্রদায়। প্রায় ৬ থেকে ৭ লক্ষের এই বিশাল সংখ্যার যুব সমাজ আমাদের মূল্যবান সম্পদ। এদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার উপরই নির্ভর করছে আমাদের জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি।

    যুবসমাজই একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যুবসমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সামগ্রিক উন্নয়নের চিন্তা বাস্তবতা বিবর্জিত। যুব সমাজ বলবান, আত্মবিশ্বাসী, সৃজনশীল ও উৎপাদনশীল শক্তি। তাদের আছে স্বপ্ন, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সাহস, পরিবর্তনের আশা- আকাঙ্ক্ষা। তারা চঞ্চল কিন্তুু বেগবান। যুব সমাজের এই আত্ম প্রত্যয় ও গতিময়তাকে কাজে লাগাতে পারলেই কেবল সম্ভব প্রকৃত জাতীয় উন্নয়ন।

    আমাদের যুব সমাজকেও উদ্যোগী হতে হবে। নিজেদের গড়ে তুলতে হবে দক্ষ, যুগোপযোগী ও স্মার্ট নাগরিক হিসেবে। নিজেদের প্রতিভাকে মেলে ধরতে হবে বিশ্ব পরিমণ্ডলে। নিজেদের উদ্যম, সৃজনশীলতা, গতিময়তা এবং উদ্ভাবনীমূলক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বৈতরণী পার হতে চাই সে স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য রাখতে অগ্রণী ভূমিকা।

    কর্মপ্রিয় মানুষরা বলে থাকেন দীর্ঘ জীবন নয় যৌবন চাই, যে যৌবন হবে কর্মমুখর। যে যৌবন হবে সমাজ,দেশ, জাতি, পৃথিবীর জন্য কল্যাণকর, আগামীর জন্য প্রেরণার বাতিঘর। আমরা এমন যুব সম্প্রদায় চাই যারা হবে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিবর্তনের হাতিয়ার।তাই এখন যৌবন যার তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা যেমন অনেক তেমনি রাষ্ট্রের কাছেও প্রত্যাশা এই বিপুল যুবসমাজকে কাজে লাগতে নেওয়া হবে আরো নানামুখী রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ।

    লেখকঃ- রেফায়েত উল্যাহ রুপক
    শিক্ষার্থী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print

    সর্বাধিক পঠিত

    আমাদের ফেসবুক

    আমাদের ইউটিউব