চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘কেমন ক্যাম্পাস চাই’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (০৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ কনফারেন্স রুমে বেলা ১২টার দিকে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার, বিশেষ অতিথি চবি উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আজ আমি উপ-উপাচার্য নয় বরং সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তার একজন কর্মী হিসেবে এখানে এসেছি। জুলাই বিপ্লবের আগেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিস্তর কথা বলেছি। জুলাই বিপ্লবের পরেও আলোচনা করেছি। আমাদের মনে রাখতে হবে রাষ্ট্র ও সরকার দুটি আলাদা বিষয়। সরকার কলুষিত হলে রাষ্ট্রও কলুষিত হয়।
উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের জন্য নয়। সুতরাং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে রাত ১২টার পরেও শিক্ষার্থীরা চলাফেরা করতে পারে পড়ালেখা করতে পারে এমন একটা ক্যাম্পাস আমরা চাই। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মান উন্নয়নের যত সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ভালো ক্যম্পাস গড়ার জন্য বেশি পরিশ্রম লাগে না। যার ওপরে যে দায়িত্ব আছে সে যদি তার দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করে তাহলে এই ক্যাম্পাসকে সুন্দর করে গড়ে তোলা যাবে। পাশাপাশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার কথাও তিনি বলেন।
প্যানেল আলোচনায় অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, ‘কেমন ক্যাম্পাস চাই’ এ বিষয়ে আমার কয়েকটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি। আমরা বৈষম্যহীন একটি ক্যাম্পাস চাই। আমরা এমন ক্যাম্পাস চাই যেখানে যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি হবে। র্যাংকিংয়ের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে হবে। এমন ক্যাম্পাস চাই যেখানে নিয়মিত ক্লাস হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দর একটি পরিবেশ বিরাজ করবে যা শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকাশে কাজে আসবে। উন্নত লাইব্রেরি চাই যেখানে হাতের নাগালে সব বই পাওয়া যায়। উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্র চাই। যাতায়াতের জন্য নিরাপদ যোগাযোগ পরিবহন চাই। মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাই। মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। ক্যাম্পাসে কোনো অসামাজিক কার্যক্রম চলবে না। ভালো কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থা ডিজিটাল করতে হবে। যথাসময়ে সমাবর্তন চাই। অনলাইন সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করতে হবে। আদর্শ নম্র ও যোগ্য শিক্ষক চাই। রাত ৯টা পর্যন্ত লাইব্রেরি খোলা চাই। নিপীড়নমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। চাকসু কেন্দ্রীক ছাত্ররাজনীতি চাই।
সেমিনারে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে সুন্দর ও প্রাণবন্ত একটি ক্যাম্পাস গড়তে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।