আজ শনিবার ║ ২রা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ শনিবার ║ ২রা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ║১৭ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার চক্রান্ত প্রতিহতের ঘোষণা

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার চক্রান্ত করছে একটি সিন্ডিকেট। তবে এসকল চক্রান্ত প্রতিহত করে দেশের স্বার্থে এই বন্দরকে রক্ষা করতে আন্দোলনে নেমেছে ‘দেশ বাঁচাও, বন্দর বাঁচাও আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন। চক্রান্ত থেকে সরে না আসলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। বন্দরকে রক্ষায় অন্তবর্তী সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলা হয়েছে।
    সমাবেশে বলা হয়েছে, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে নানাভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা বন্দর নিয়ে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার ঘোষণাও দিয়েছে।
    মো. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, গণফোরামের কো-চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্যসচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইশরাম, কল্যাণ পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, বিএলডিপির যুগ্ম মহাসচিব এম এ বাশাার, গণঅধিকারের শহিদুল ইসলাম ফাহিম, শ্রমিক নেতা মো. বাহার মিয়া প্রমূখ।

    বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের তৎপরতা চলছে। নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন করা হচ্ছে। যারা এই কনটেইনার টার্মিনালের দায়িত্বে আছেন তারা রাষ্ট্রকে বড় সংখ্যক রাজস্ব দিয়ে আসছেন। কিন্তু এখন বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

    ষড়যন্ত্র বন্ধের উদ্যোগ নিতে অন্তবর্তী সরকারের নৌ পরিবহণ উপদেষ্টাকে আগামী ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে সাইফুল হক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল নিয়ে বিদেশি দুবাই ভিত্তিক কোম্পানিকে দেওয়ার যে তৎপরতা, তা আপনি স্থগিত করবেন। তারপর দেশীয় ও বন্দর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন, চট্টগ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। কীভাবে আমরা আমাদের কোম্পানির মধ্য দিয়ে বন্দরের গতি সঞ্চার করতে পারি তা আলোচনা করবেন।

    তিনি বলেন, ৫৪ বছর পরও একটা জাতি রাষ্ট্র নিজেদের বন্দর যদি নিজেরা চালাতে না পারে এটা আমাদের জন্য লজ্জার ও অপমানের। অদক্ষতার কথা বলে কোনো অজুহাতে চট্টগ্রাম বন্দরকে কোনোভাবেই অন্য কারও হাতে জিম্মি করতে আমরা দিব না। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ। প্রয়োজনে ঢাকা- চট্টগ্রামে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন মিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

    বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের অর্থনীতির লাইফ লাইন। আমাদের নিজস্ব উদ্যোগে দেশীয় কোম্পানিগুলো এই বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে। এর সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতি ও হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান যুক্ত। আমরা কোনোভাবেই এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, যাতে চট্টগ্রাম বন্দর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। এর আগে ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের সময় দুবাই ভিত্তিক একটা কোম্পানির সঙ্গে একটা সমঝোতা স্মারক তৈরি করা হয়েছে। এখনো কোনো চুক্তি হয়নি।

    অন্তবর্তী সরকারের নৌ পরিবহণ উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর কোনোভাবেই বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে পারি না। লিজ দিতে পারি না। আপনারা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না, যা সরকারকে বিতর্কিত করবে। যেটা সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। বাংলাদেশের জনগণ ও গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার কাছে আপনাদের দায়বদ্ধতা আছে। কিন্তু কোনো বিদেশি কোম্পানি, সংস্থা কিংবা স্বার্থের কাছে আপনাদের মাথা নত করার কোনো সুযোগ নাই।
    গত ১৫ বছর বাংলাদেশকে ভারতের শেয়ার হোল্ডার হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। আমাদের জাতীয় মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে ভারতের চাওয়া অনুযায়ী বাংলাদেশে বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হতো। সেই জায়গা থেকে সরকারকে ফিরে আসতে হবে।

    নুরুল হক নুর বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয় অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। সেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের মতো একটা বিষয় নিয়ে রাজপথে নেমে কথা বলতে হবে এটা আমরা আশা করিনি। এখনো দেশীয় কোম্পানি বন্দর পরিচালনা করছে, সেখানে নতুন করে কেন বিদেশি কোম্পানিকে নিয়ে আসতে হবে। এখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের বিষয় আছে। নৌ পরিবহণ উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশের ও জাতীয় স্বার্থে বন্দরকে বিদেশি কোম্পানির হাতে বন্ধক দেওয়ার অপতৎপরতা বন্ধ করুন। দেশীয় কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দিন। অনতিবিলম্বে চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে আপনাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ আবারও রাজপথ নামবে।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print

    সর্বাধিক পঠিত

    আমাদের ফেসবুক

    আমাদের ইউটিউব

    সর্বশেষ খবর