বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য কারাগারও নিরাপদ নয়। দেশের কারাগারগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীরা মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কারাগারগুলো বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্বারা পরিপূর্ণ। নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তারের আগে বাইরে যেমন হয়রানি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন, কারাগারেও তারা তেমনি নির্যাতিত হন। চট্টগ্রামের মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি গোলাপুর রহমান ঢাকা কাশিমপুর কারাগারে বন্দি অবস্থায় গত ২৫ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সুস্থ শরীরে বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সমাবেশের আগের দিন তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে বন্দী করে রাখে। এই বন্দী অবস্থায় তিনি বিনা চিকিৎসায় মারা যান।চিকিৎসা না দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এখনো বিএনপির কেউ যাতে টুঁ শব্দ করতে না পারে সেজন্য কারাগারের ভিতরে ও বাহিরে নেতাকর্মীদের উপর চলছে অমানবিক আচরণ।নেতাকর্মীদের সব সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
তিনি রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) বিকালে মোহরা চর রাঙ্গামাটিয়া এলাকায় ঢাকার কাশিমপুর কারাগারে বন্দী অবস্থায় মৃত্যুবরনকারী মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি গোলাপুর রহমানের বাসভবনে পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাতকালে এসব কথা বলেন।
মরহুম গোলাপুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বাদে আসর স্থানীয় বায়তুল ইজ্জত জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এসময় নেতৃবৃন্দ মরহুমের কবর জিয়ারত করে কবরে ফুলের শ্রদ্ধা জানান। এরপরে ঢাকায় গ্রেফতারকৃত চান্দগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আজম সহ সাত বিএনপি নেতাকর্মীদের কারামুক্তিতে ফুলেল সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এসময় ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সরকার তাদের দখলদারিত্ব ধরে রাখার জন্য পুরো দেশকে নরকপুরিতে পরিণত করেছে। ঘরে বাইরে কোথাও মানুষের নিরাপত্তা নেই। সরকার বিরোধীদের জীবন রাষ্ট্রীয় বন্দুকের নলের নিচে বন্দি। কারাগারে বিএনপি নেতাকর্মীদের দিনরাত লকআপে রেখে অতি নিম্নমানের খাবার দিয়ে অসুস্থ বানিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। মৃত্যুর পর সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায় এড়ানোর জন্য গল্প সাজিয়ে মিথ্যাচার করে। প্রতিটি মৃত্যু ও হত্যার জন্য তাদের একদিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, দেশের কারাগারগুলো এখন একেকটি টর্চার সেল। বাইরের মতো কারাগারগুলোও পরিণত হয়েছে মৃত্যু উপত্যকায়। যেখানে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু আতঙ্কে থাকেন রাজনৈতিক বন্দিরা। গায়েবী মিথ্যা মামলায় সুস্থ সবল বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরে নির্যাতন করে কারাগারে নিক্ষেপের পর লাশ বানিয়ে বের করা হয়। তিনি বন্দীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহবায়ক কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন লিপু, চান্দগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আজম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া, মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জানে আলম জিকু, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান, বিএনপি নেতা ইকবাল চৌধুরী, মহসিন কবির আপেল, কারামুক্ত বিএনপি নেতা মো, ইয়াসিন, মনসুর আলম, মো. জাবেদ, মো. হানিফ, মো. ইলিয়াস, মো. জাবেদ প্রমুখ।