আজ সোমবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ সোমবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১১ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় চাই সম্মিলিত উদ্যোগ

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চাই দক্ষ ও স্মার্ট নাগরিক,তার জন্য সবার আগের দরকার দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা ও মূল্যায়ন পদ্ধতির সংস্কার, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকার নানাবিধ সংস্কার উদ্যোগ গ্রহন করলেও সমস্যার সমাধান প্রতীয়মান হচ্ছে না। যার কারণে শিক্ষার্থীরা ফলাফলে সাফল্য অর্জন করেও পেশাগত ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জন কিংবা চাকুরীর বাজারের বিদ্যমান চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এর ফলে দেশে দিনদিন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর এই শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী পরিবারের কাছে বোঝায় পরিনত হচ্ছে। পরিবার,সমাজ ও আত্মীয় পরিজনের কাছে কটাক্ষের স্বীকার হয়ে অনেকে বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার মতো পথ।

    যুগোপযোগী শিক্ষা ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা না গেলে এদেশের এই বিদ্যমান সমস্যা আরো বেশি প্রকট আকার ধারন করবে। বর্তমানে বেকারত্ব একটি মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে। এখন সরকারি, বেসরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ গুলো গ্রাজুয়েট তৈরির অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এছাড়া প্রশ্ন ফাঁস, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ, মুখস্থ ও শীট নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার কারনে শিক্ষার প্রকৃত সুফল হতে জাতি বঞ্চিত হচ্ছে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত কাজ একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ এবং বিজ্ঞানমনস্ক, প্রগতিশীল, আধুনিক ও যুগোপযোগী নাগরিক তৈরী করা। এ লক্ষ্যে গবেষণা বৃদ্ধি এবং অধিক পরিমাণে গবেষক তৈরী করার উপর জোর দেওয়ার প্রয়োজন। কিন্তুু তা না করে একটি চাকুরী প্রত্যাশী প্রজম্ম তৈরির লক্ষ্য নিয়েই পাঠদান ও সার্টিফিকেট প্রদান করছে বিশ্ববিদ্যালয় গুলো।

    বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুুত থাকে না। ফলে তারা একটি নিরাপদ, কম ঝুঁকিপূর্ন পেশা বেছে নিতে চায়। একারনে তাদের স্বপ্ন ডাক্তার,
    প্রকৌশলী, আইনজীবী, বিসিএস ক্যাডার, ব্যাংকার, শিক্ষক সহ প্রচলিত চাকুরীর পিছে ঘুরপাক খায়। উদ্যোক্তা হওয়া বা গবেষণার মতো পরিশ্রম ও সময় সাপেক্ষ পেশা বেছে নিতে তাদের অনীহা কাজ করে। এছাড়া সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা লোক -লজ্জায় কম বেতনের বা পদ মর্যাদায় ছোট কাজ করতে চায় না। এজন্য সমাজের সর্বস্তরের সবাইকে বুঝাতে হবে কোন কাজই ছোট বা বড় নয়, সবার গুরুত্ব সমান।এছাড়া ক্যারিয়ার ভিত্তিক ও কারিগরি শিক্ষা প্রদান করতে হবে। একটি উদার ও কার্যোপযোগী নতুন প্রজম্ম সৃষ্টি করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। এব্যাপারে সরকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবীদের কার্যকর ভূমিকা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, আধুনিক শিক্ষা উপকরণ নিশ্চিতকরণ,দক্ষ শিক্ষক তৈরির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা এবং মেধাবীদের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে জড়িত করতে হবে।

    একটি বিজ্ঞান মনস্ক জাতি ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করতে না পারলে আগামীর প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলা দুরূহ হয়ে পড়বে বাংলাদেশের জন্য। ইতিমধ্যে সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের ঘোষনা দিলেও এখনও বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে অদক্ষ, তাদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া না গেলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী নাগরিক হিসেবে তৈরির করার স্বপ্ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি তধারকি বৃদ্ধি করতে হবে এবং গবেষণা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে। একটি সম্মিলিত পদক্ষেপেই পারে বাংলাদেশকে নতুন পৃথিবীর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখতে।

    লেখক: শিক্ষার্থী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print

    সর্বাধিক পঠিত

    আমাদের ফেসবুক

    আমাদের ইউটিউব