
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের ১৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৪০ জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সমাজতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ আবু হাছান বাদি হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন ।
বিবাদীরা হলেন, সৌমেন দত্ত (২৭), (সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, চবি ছাত্রলীগ), ইয়াসিন আরাফাত (২৭), (আইন বিভাগ সেশন ১৫-১৬) মনিরুজ্জামান (২৩), (আইন বিভাগ সেশন-২০-২১), আবরার শাহরিয়ার (২৯), (সাবেক সহ-সভাপতি, চ.বি ছাত্রলীগ), মীর্জা খবির সাদাফ খান (২৮), (আইন বিভাগ ১৪-১৫ সেশন), খালেদ মাসুদ (২৭) (আইন বিভাগ সেশন-১৭-১৮), সাইদুল ইসলাম সাঈদ (৩২), (লোকপ্রশাসন বিভাগ ১১-১২ সেশন), মিজান শেখ (৩১) (আইন বিভাগ, সেশন- ১৩-১৪), আকিব জাবেদ (২৬), (বাংলা বিভাগ ১৮-১৯ সেশন), অনুপ সরকার আকাশ (২৬), (ইতিহাস বিভাগ ১৮-১৯ সেশন), তায়েব পাঠান (২৬), (বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ, সেশন- ১৮-১৯), তানভীর আলম আকাশ (২৪), (বোটানি ডিপার্টমেন্ট, ১৯-২০ সেশন), মাহমুদুজ্জামান ওমর (২৩), (আইন বিভাগ, সেশন-২০-২১), মোহাম্মদ নাঈম (২৩), (ইতিহাস বিভাগ, ২০-২১ সেশন), আরাফাত রায়হান (২৫), (সমাজতত্ত্ব বিভাগ সেশন-১৮-১৯) স্থায়ী ঠিকানা-অজ্ঞাত সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩০/৪০ জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদি মোঃ আবু হাছান (২৪) সঙ্গীয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জনাব তানভীর মোঃ হায়দার আলী, সহকারী প্রক্টর মোঃ নুরুল হামিদ কানন, সহকারী প্রক্টর সাঈদ বিন কামাল স্যারদের সহায়তায় উপরে বর্ণিত ০৩নং বিবাদী মনিরুজ্জামান (২৩), পিতা-শহীদ উল্লাহ, মাতা-মনোয়ারা বেগম, সাং-মেথি কান্দা, ১নং ওয়ার্ড, পলাশতলী ইউপি, থানা-রায়পুরা, জেলা-নরসিংদী, বর্তমানে-আইন বিভাগ, সেশন-২০-২১, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে আটক পূর্বক থানায় হাজির হয়ে বর্ণিত বিবাদীগনের বিরুদ্ধে এই মর্মে এজাহার দায়ের করিতেছি যে, গত ১৫/০৭/২০২৪ ইং সময় অনুমান বিকাল ০৩:৩০ ঘটিকা হইতে ০৫.৩০ ঘটিকার সময় হাটহাজারী থানাধীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর শহীদ মিনারের আঙ্গিনায় আমি সহ চবির ৭০/৮০ জন শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলন করাকালীন সময়ে বর্নিত ঘটনায় পৌঁছামাত্র ০১নং আসামীর নেতৃত্বে এজাহারনামীয় ০২নং হইতে ১৫নং বিবাদীসহ তাহাদের হাতে থাকা ধারালো রামদা চাপাতি, কিরিজ, লোহার রড, স্ট্যাম্প ও লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। ঐ সময় ০১নং বিবাদীর হাতে থাকা স্ট্যাম্প দিয়ে আমার সাথে থাকা ভিকটিম মোঃ মাহাবুবুর রহমান, পিতা-কামাল উদ্দিন, সিএসই বিভাগ, (সেশন-২০-২১) এর মাথায় বাড়ি মারিয়া রক্তাক্ত ফাটা গুরুতর জখম করে। ১৪নং আসামীর হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে ভিকটিম মোঃ মাহাবুবুর রহমানকে এলোপাথাড়ি বাড়ি মারিয়া তাহার পিঠে থেঁতলানো জখম করে। অন্যান্য বিবাদীগণ তাদের হাতে থাকা ধারালো দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং এলোপাথাড়ি সবাইকে মারধর করে। বর্ণিত বিবাদীগণ আন্দোলনে থাকা নারী শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে বিভিন্নভাবে শারিরীক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করে। অতঃপর আমি সহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শোর-চিৎকারে আশপাশের শিক্ষার্থীরা আগাইয়া আসিলে উপরোক্ত বিবাদীগণ আমাদেরকে পরবর্তীতে কোটা সংষ্কার আন্দোলন করিলে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করিয়া পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি সহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ভিকটিম মোঃ মাহাবুবুর রহমানকে উদ্ধার পূর্বক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিমের অবস্থা আশংকাজনক দেখিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করিলে আমরা ভিকটিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। চিকিৎসা শেষে আমি উক্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেশ ও ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে না বলে অবহিত করেন। আমি চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যান্তরিন প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করায় এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।