আজ বুধবার ║ ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ বুধবার ║ ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১২ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    ১১,৫৬০ কোটি টাকার সেতুতে থাকছে সড়ক ও রেলের ডাবল লাইন

    শীঘ্রই শুরু হবে ৬০ ফুট প্রশস্ত কালুরঘাট নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    নানা জটিলতা ও প্রতিকূলতা কাটিয়ে অবশেষে শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামবাসীর স্বপ্নের কালুরঘাট নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ। সম্প্রতি এই সেতুর কাজ এগিয়ে নিতে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১১,৫৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুতে থাকছে সড়ক ও রেলের স্ট্যান্ডার্ড ডাবল লাইন। ৬০ ফুট প্রশস্ত এই সেতুর দৈর্ঘ হবে ১১ কিলোমিটার। উচ্চতা ধরা হয়েছে বর্ষাকালে পানির সর্বোচ্চ লেভেল থেকে ১২ মিটার। তবে মূল সেতুর দৈর্ঘ ৭০০ মিটার। উচ্চতার সাথে লেভেল ঠিক রাখার জন্য উভয়পাশে প্রায় ৫ কিলোমিটার করে ১০ কিলোমিটার রাস্তা সংযুক্ত থাকছে এই প্রকল্পের সাথে। সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. আবুল কালাম চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
    প্রকল্প পরিচালক কালাম চৌধুরী জানান, বর্তমান সেতু থেকে ৭০ মিটার উজানে কোরিয়ার আর্থিক সহায়তায় কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণ প্রকল্প চুড়ান্ত হয়েছে। রেল চলাচলের জন্য ৩০ ফুটের মধ্যে ডাবল লাইন এবং সড়ক পরিবহন চলাচলের জন্য ৩০ ফুটের ডাবললাইন নির্মাণ করা হবে। মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে আরো থাকছে ৬.২০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ, ২.৪০ কিলোমিটার সড়ক ভায়াডাক্ট, ৪.৫৪ কিলোমিটার বাঁধ, ১১.৪৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ।
    ডিটেইল ডিজাইন ফাইনালের কাজ চলছে। এরজন্য ১৪১ একর জমি অধিগ্রহণ করার জন্য ২৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে খুব শীঘ্রই টেন্ডার আহবান করা হবে। টেন্ডারে শুধুমাত্র কোরিয়ান ঠিকাদার বা জয়েন্ট ভেঞ্চারের (জেভি) মাধ্যমে অন্যরা অংশগ্রহণ করতে পারবে। সবঠিক থাকলে ২০৩০ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গত বছরের অক্টোবর মাসে ১১,৫৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

    মোট ১১,৫৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪,৪৩৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা দিবে বাংলাদেশ সরকার এবং বাকি ৭,১২৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা আসবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) এবং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটিজ (ইডিপিএফ), কোরিয়া থেকে।
    কক্সবাজারকে আরও উন্নত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তর, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সংলগ্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্যও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রয়োজন। কিন্তু কালুরঘাটে বিদ্যমান সেতুটি পুরনো ও জরাজীর্ণ হওয়ায় অগ্রধিকার ভিত্তিতে সরকার এই প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
    প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন রেল যোগাযোগ নিশ্চিত এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযোগের সুযোগ তৈরি হবে। বর্তমানে পুরানো ও জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারে না। এছাড়া মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হলে, এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন চাঙ্গা হবে, তেমনি এ রুটের গুরুত্বও বাড়বে। ইতোমধ্যেই দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন চালুর মাধ্যমে ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। ফলে পর্যটন নগরীর সঙ্গে নির্বিঘ্নে যোগাযোগ নিশ্চিত করতে বিদ্যমান পুরাতন সেতুর পাশে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন রেল-কাম-সড়ক সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
    বর্তমানে দেশের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমের ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে নির্বিঘ্ন রেল যোগাযোগ এবং পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নতুন সেতুটি নির্মিত হলে, এই অঞ্চলের বিভিন্ন রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত কল-কারখানার পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য পরিবহন করতে সহজ হবে।
    কালুরঘাটের বর্তমান সেতুটি একমূখী হওয়ায় সড়ক পথের যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকারে পৌছেছে। জ্যামের কারনে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার করতে হয় গাড়িতে বসে। একদিকে যেমন ভোগান্তি অন্যদিকে সময় অপচয়। তাছাড়া বর্তমানে এই সেতুতে ভারী যনি চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ফেরি সার্ভিস। কিন্তু বর্ষাকালে ঘাটে পানি ওঠে দুর্ভোগের মাত্রা বাড়ে আরো কয়েকগুন। এই সেতু বাস্তবায়ন হলে এসব সমস্যারও সমাধান হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print

    সর্বাধিক পঠিত

    আমাদের ফেসবুক

    আমাদের ইউটিউব

    সর্বশেষ খবর