আজ শনিবার ║ ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ শনিবার ║ ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ৯ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    চট্টগ্রাম-১৩ আসনে সহজেই জিততে পারবে নৌকা

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ছাড়া তেমন কোন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। এই আসনে নৌকার প্রার্থী ছাড়া অন্যান্য ৬টি রাজনৈতিক দল থেকে ছয় জন প্রার্থী অংশ নিলেও নৌকার প্রার্থী অনেকটা ‘টেনশনহীন’ ভাবেই সময় পার করছেন বলে এলাকার ভোটাররা জানান। ফলে ধারণা করা যায় খুব সহজেই জিততে পারবে নৌকার প্রার্থী।

    ১৭ ডিসেম্বর (রোববার) মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনেও এ আসন থেকে কেউ প্রত্যাহার না করায় প্রতীক পেয়ে বহাল রয়েছেন-বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে সাইফুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), তৃণমূল বিএনপি থেকে মকবুল আহম্মদ চৌধুরী (সোনালী আশঁ), জাতীয় পার্টি থেকে আবদুর রব চৌধুরী (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মোহাম্মদ আবুল হোসেন (মোমবাতি), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোসাইন (চেয়ার), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি মো. আরিফ মঈন উদ্দীন (একতারা) ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন মৌলভী রশিদুল হক (বটগাছ)।

    প্রার্থীদের তালিকা দেখে কর্ণফুলী উপজেলা ও আনোয়ারা উপজেলার একাধিক ভোটারেরা গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম ১৩ আসনে প্রতিযোগিতামূলক কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। অতীতে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিবিহীন ভোটে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন আওয়ামী লীগ, তাদের জোট ও সমমনা দলের প্রার্থীরা। এবার বিনা প্রতিদ্বদ্বিতায় জয়ী হওয়া ঠেকাতে মূলত বিএনপি না আসায় সবকটি আসনে ‘ডামি’ প্রার্থী রাখার পরামর্শ ছিলো সরকার দলের। যদিও এ আসনে আওয়ামী লীগের কোন স্বতন্ত্র প্রার্থীও নেই। আছে নামেমাত্র কয়েকজন ‘ডামি’ প্রার্থী। যাদের কেউ চিনেও না। যাদের নাম কেউ কখনো আগে শুনেনি এমন মন্তব্য জনতার।

    দুই উপজেলার সাধারণ ভোটারেরা আরও জানান, নির্বাচনকে উৎসব ও প্রতিযোগিতামূলক করতে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি এসব প্রার্থীদের মাঠে রাখা হয়েছে। অনেকেই আবার এসব প্রার্থীদের সরাসরি ডামি প্রার্থী বলেছেন। কেনোনা একজন প্রার্থী যিনি সাধারণত কোন উদ্দেশ্য বা জয়ের বাস্তবসম্মত সম্ভাবনা ছাড়াই নির্বাচনে দাঁড়ান। এখানেও সে রকম মনে হচ্ছে ভোটারদের। কেনোনা
    রাজনৈতিক দলগুলো নানা কারণে তাঁদের দল থেকে ডামি প্রার্থী দেয়ার নজির রয়েছে। ভোটারদের বিভ্রান্ত করার জন্য এবং কোন নির্দিষ্ট প্রার্থীর ভোট কমানোর জন্য ডামি প্রার্থী মাঠে নামান তাঁরা। বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে এসব ডামি ও দামি প্রার্থী নিয়ে আলোচনা চলছে বেশ জোরেসোরে।

    এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে টানা তিন বার নির্বাচিত সাইফুজ্জামান চৌধুরী ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। কর্ণফুলী-আনোয়ারার লোকজন জানান, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগ ও তাঁর অঙ্গসংগঠনের নেতারা বেশ সক্রিয়। দুই উপজেলায় তাঁর জনপ্রিয়তাও তুঙ্গে। নেতারাও মাঠ গুছিয়ে রেখেছেন। নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণের কাছে তিনি সৎ-পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও ক্লিন ইমেজের মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় তিনি প্রতি সপ্তাহে জনসাধারণ ও নেতাকর্মীদের সময় দেন, এলাকার মানুষের খোঁজ-খবর নেন। দলের ভেতরে বাহিরে ও অন্যান্য দলেরও কাউকে তিনি অন্যায় করলে প্রশ্রয় দেননি বলে প্রচার রয়েছে।

    আসনটি স্থানীয়ভাবে ভিআইপি আসন হিসেবেও পরিচিত। কেনোনা, এ আসনের বিজয়ী প্রার্থী এমপি, প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড রয়েছে।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন, এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নেতাদের মোকাবিলায় শরিক দলের প্রার্থীদের পাস করে আসা সম্ভব নয়। কারণ আওয়ামী লীগের কর্মীদের সামনে দাঁড়ানোর মতো কর্মী ও জনবল তাঁদের নেই। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম-১৩ আসনে নৌকার প্রার্থী আগাম বিজয়ী বলেও অনেকেই মন্তব্য করেছেন। কর্ণফুলীর আলমগীর কবির নামে এক ভোটার জানান, গোল পোস্ট গোল রক্ষক সবই শূন্য, মাঝমাঠ থেকেই গোল।

    এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম টুকু ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান তালুকদার বলেন, সাংগঠনিক ভাবে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি শতভাগ ইনশাআল্লাহ। অন্যান্য দলের যারা প্রার্থী রয়েছেন তাঁদের সাথে সুন্দর সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

    আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান বলেন, নির্বাচনী প্রস্তুতি বলতে আ.লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের প্রতিটি ইউনিয়ন ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা কাল থেকে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করব। আগামীকাল বন্দর সেন্টারে নির্বাচনী জনসভা হবে। সেখানে আমাদের প্রার্থী উপস্থিত থাকবেন। সুন্দর সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে ইনশাআল্লাহ। ভোট কেন্দ্রে যাতে ভোটার এসে ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ আমরা তৈরি করব। তাছাড়া এখানে শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় আমরা শতভাগ জয়ের আশাবাদী।

    তৃণমূল বিএনপি (সোনালি আঁশ) এর প্রার্থী মকবুল আহম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘দল আমাকে এ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আমি আশাবাদী সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ আমাকে বিজয়ী করবেন।’
    একই ভাবে অন্যান্য প্রার্থীরাও একই আশা ব্যক্ত করেন।

    জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে দুটি উপজেলা। আনোয়ারা ও কর্ণফুলী। আনোয়ারায় ১১টি ইউনিয়ন ও কর্ণফুলীতে ৫ টি ইউনিয়ন। আনোয়ারায় ভোটকেন্দ্র ৭২ টি, কর্ণফুলীতে ৪৬টি মোট দুই উপজেলায় ১১৮টি। আনোয়ারায় ভোটকক্ষ ৪৮৪টি, কর্ণফুলীতে ২৬৮টি মোট ৭৫২টি কক্ষ। আনোয়ারায় পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২২ হাজার ১১৭ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৮ হাজার ৪৯০ জন। কর্ণফুলীতে পুরুষ ভোটার ৬৭ হাজার ১২৬ জন ও মহিলা ভোটার ৫৯ হাজার ১৩১ জন। দুই উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮৬৪ জন।

    ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি। এই নির্বাচনে বিএনপি না এলেও প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছেন বলে ইসি জানান।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print

    সর্বাধিক পঠিত

    আমাদের ফেসবুক

    আমাদের ইউটিউব