চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকায় গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন হরতাল চলাকালে বিএনপির মিছিলে পুলিশের হামলাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের পরের দিন থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হয়রানিমূলক অভিযান ও পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা।
এধরনের গ্রেফতার ও নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল নোমান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
বুধবার (১০ জানুয়ারী) এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএনপির ডাকা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণ এখন একাত্তরের দিনগুলোর চেয়েও চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। চান্দগাঁও এলাকায় বিএনপি নেতাদের বাসায় না পেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করছে। পুলিশ দিনে রাতে যে কোনো সময় নেতাকর্মীদের ধরতে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে বাসায় না পেয়ে তাদের পিতা, ভাই কিংবা অন্য সদস্যদের অন্যায়ভাবে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। আটককৃত নেতাকর্মী কিংবা তাদের আত্মীয় স্বজনদের থানায় নিয়ে গিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হচ্ছে। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও মহানগর বিএনপির সদস্য এরশাদ উল্লাহ সহ শতশত নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছে। অথচ ঐদিনের কর্মসূচিতে আবু সুফিয়ান ও এরশাদ উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মঙ্গলবার রাতে চান্দগাঁও থানা পুলিশ চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি নওশাদ আল জাসেদুর রহমানের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার প্রবাসী বড় দুই ভাই আবেদ মাহমুদ রহমান ও ব্যাংকার জাবেদুর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে নির্যাতনের পর আবেদ মাহমুদ রহমানকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে। তাছাড়া চান্দগাঁও থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক এরশাদ হোসেনের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার বাবা আবদুর রাজ্জাক ও বড় ভাইকে বাসায় সবার সামনে বেধড়ক মারধর করে ও বড় ভাই মো. জাবেদকে মিথ্যা মামলায় চালান দিয়েছে। এছাড়া চান্দগাঁও ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. আবছারের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার মামা মো. মামুনকে, ওয়ার্ড যুবদল নেতা জিসানকে না পেয়ে তার বাবা মো. ইলিয়াস, ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. শাহিনকে না পেয়ে তার বড় ভাই মো. শামিম, চান্দগাঁও থানা যুবদলের সদস্য মো. মোবারক, মোহরা ওয়ার্ড যুবদল নেতা আবদুর রাজ্জাক, যুবদল কর্মী মঞ্জুর আলম ও মো. সাইদকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, চান্দগাঁও ওয়ার্ড যুবদল নেতা নয়ন মাহমুদকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা মো. ইদ্রিসকে বেধড়ক মারধর করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। এর আগে নির্বাচনের দিন চান্দগাঁও ওয়ার্ডে বিএনপির শান্তিপূর্ন মিছিলে পুলিশের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
নেতৃবৃন্দ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা বিএনপি নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করে অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির জোর দাবি জানান।