
শর্ষে ক্ষেতের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে রেল লাইন। যাত্রীরা উপভোগ করছে মনোরম হলদে আভার প্রাকৃতিক দৃশ্য। মনে হয় যেন হলুদ রঙের বিছানার মাঝ দিয়ে পাতানো হয়েছে রেল লাইন। এদিকে শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে শর্ষে ফুলে জমেছে শিশির। শর্ষে ফুলের হলুদ আভায় ভরে গেছে চারদিক । প্রজাপতি ডানা মেলে উড়ছে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে। প্রজাপতিরা ডানা মেলে উড়ছে দেখে শিশুরাও আনন্দে বিভোর। শিশুরা শর্ষে ক্ষেতে অবাধ বিচরণ করে হলুদের অনুভূতিতে আনন্দ উপভোগ করছে। কিন্তু এতে চাষীর ফসল বিনষ্ট হচ্ছে সেদিকে খেয়াল নেই লুটোপুটি খাওয়া শিশুদের অভিভাবকের। বাধার বাঁধ ভেঙ্গে সন্ধ্যা অবধি শর্ষে ক্ষেতকে ঘিরে শিশুদের আনাগোনাও কমে না। মেয়ে শিশুদের মধ্যে কেউ কেউ কানে শর্ষে ফুল লাগিয়ে গৃহবধূর অঙ্গভঙ্গিও চালায়। আবার কেউবা কুড়িয়ে নেয় মায়ের কাছে। বিঘার পর বিঘা শর্ষের এ চাষ দেখা গেছে ফেনীর ফাজিলপুর ইউনিয়নে।
ষড়ঋতুর এদেশে এখন ঋতুর সময়কালে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঋতু বৈচিত্রের এ দেশে ফসলী জমিতে ফলনেও পরিবর্তন এসেছে। এক সময় মাঘ মাসে প্রচুর শীত অনুভূত হলেও তা এখন আর কার্যকর হচ্ছে না। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শীতের অনেকটা ক্রান্তিলগ্ন দেখা যাচ্ছে । তবে ফসলের জমিতে এ পরিবর্তন এখনও আসেনি। কালের বিবর্তনে চাষীরা ফসল ফলাতে যেমন সক্ষম তেমনি বাম্পার ফলন তাদের কাছে আর্শিবাদের মত। কিন্তু ফসলী জমিতে যখন মনের আনন্দে শিশুরা নেমে যায় তখন চাষীদের বাধা বিপত্তি ততটা কার্যকর হয় না আদুরে স্বভাবের কারণে।
ফেনীর ফাজিলপুর ইউনিয়নের কাদের হাই স্কুলের কাছেই দেখা গেছে বিশাল এলাকা জুড়ে শর্ষের আবাদ । বিঘার পর বিঘা সরিষার চাষ হয়েছে। চারদিকে তাকালে শুধু হলুদের সমারোহ। সরিষা গাছগুলো হলুদ ফুল বিলিয়ে দিয়ে যেন মনে হয় আকাশ পাণে চেয়ে আছে। শীতের ক্রান্তিলগ্নে শিশিরের প্রভাবটাও অনেকটা কমেছে। কিন্তু শর্ষে ফুলে ফুলে জমে থাকা শিশির ধরতে শিশুদের মধ্যে রয়েছে সীমাহীন কৌতুহল। তাই ছুটে যায় শিশুরাও। এক নাগাড়ে অনেক জমিতে সরিষার আবাদ করায় পুরো আঙ্গিনা যেন হলুদে ছেয়ে গেছে কার্পেটের মতোই। সূর্যাস্তের সময়ও শিশুরা লুটোপুটি খায় সরিষা ক্ষেতে।