আজ বৃহস্পতিবার ║ ৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২২শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ৯ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    রেলে আবারো ২ কোটি টাকার ভূয়া বিল: হিসাব শাখায় ধরা

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে আবারো ভূয়া বিল ভাউচার দাখিল করে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে। তবে স্টোর শাখার বিভাগীয় হিসাব কর্মকর্তার দায়িত্বশীলতার ফলে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পরে। প্রতারক চক্রের প্রতারণা নস্যাৎ করে দিতে সক্ষম হয়েছে হিসাব বিভাগ। ফলে এই মিশনে সফল হয়নি প্রতারক চক্র। বিশ্বস্ত একাধিক সুত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
    গত ২ জুন (সোমবার) প্রধান অর্থ ও হিসাব অধিকর্তার অধীনে থাকা সিআরবির বিভাগীয় অর্থ ও হিসাব বিভাগ (ডিএফএ/স্টোর্স) এমন জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।
    চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ অর্থ উপদেষ্টা সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২ জুন অফিসে আসার পর অডিটর সৈয়দা ফারজানা রহমান বাবলির টেবিলে একটা নথি দেখা যায়, যারমধ্যে এসএসআর এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ২টা বিল লক্ষ করা যায়। একটি ৯৫ লাখ আরেকটি ৯০ লাখ টাকা। সাধারণত আমাদের এখানে যে বিল পাঠানো হয় তা পিয়নের মাধ্যমে আসে এবং পিয়ন বহিতে স্বাক্ষর করে রিসিভ করা হয়। এসএসআর এন্টারপ্রাইজের বিলগুলো কে বা কাহারা এই দফতরে তা নিশ্চিত না হওয়ায় আমাদের সন্দেহ হয়। আর বিল ফরোয়ার্ডে শরিফুল নামে কর্মকর্তার স্বাক্ষরটি সন্দেহজনক মনে হয়েছে, ফলে আমরা বিলটি প্রসেস না করে বিষটি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, জিএম, আরএনবি চিফ ও সিসিএসকে চিঠি দেয়া হয়েছে, চিঠির জবাব পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর আমার নিরাপত্তার জন্য কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছি।
    হিসাব বিভাগ সুত্র জানায়, প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের (সিসিএস) দপ্তর থেকে রিসিভ নোটের (আর-নোট) মাধ্যমে দুটি বিল হিসাব অধিকর্তার অফিসে আসলে অডিটরের হাতে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। যে প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করা হয়েছে সেই নামে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বও নেই বলে জানা গেছে। এই জাল আর-নোট বাহককে খুঁজতে গেলে, আর পাওয়া যায়নি। কে বা কারা দিয়েছে তা জানা যায়নি। তবে সুত্র বলছে এই চক্রের কেউ একজন হিসাব বিভাগের তিনজন কর্মকর্তাকে ফোনে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা ম্যানেজ হলে হয়তো মূলহোতাকে পাওয়া যেত। যেহেতু কাউকে ম্যানেজ করতে পারেনি ফলে গা ঢাকা দিয়েছে প্রতারক। তবে মোবাইলে কল করা নাম্বার ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা সম্ভব।
    এব্যপারে সিসিএস দপ্তরের ইন্সপেকশনের দায়িত্বে থাকা জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (ডিসিওএস) গোলাম মোর্শেদ বলেন, এসএস আর এন্টারপ্রাইজ নামে কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিসিএস এর তালিকাভুক্ত আছে কিনা তা আমার জানা নেই, তবে আমাদের দপ্তর থেকে কোন আর নোট পাঠানো হলে তা সিসিএস এর রেজিাস্টার মেনটেইন করেই পাঠানো হয়। আর যেসব আরনোটের কথা বলা হয়েছে তা আদৌ আসল না নকল তা না দেখে বলা যাবে না।
    ঈদের ছুটি থাকায় এবিষয়ে জানতে সিসিএস এর দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি, তবে রেলওয়ের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, টাকা তুলতে ডিএফএ বিভাগে যেতে হয় না। কাগজপত্র যাচাই করে বুক অ্যান্ড বাজেট শাখায় গেলে চেক ইস্যু হয় নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে। এছাড়া প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে বিল পাঠানো কথা বলা হলেও, ‘এসএস আর এন্টারপ্রাইজ’ নামে কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব সিসিএস দপ্তরে নেই।
    ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থকে বিকাল ৪টার মধ্যে রেলের ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাতের জন্য জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করেন। যার টোকেন নম্বর- ০০১৫৩০৩১ উপস্থাপন করা হয়েছিল। ওই বিলে সরকারি কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করার পাশাপাশি নকল সিল বানিয়ে রেলের ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছিল প্রতারক চক্র। আত্মসাৎকৃত ওই টাকা অনেককেই জরিমানা দিতে হয়েছিল, ফলে এসব বিষয়ে সবাই সতর্ক অবস্থানে ছিল।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print