আজ মঙ্গলবার ║ ১১ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ মঙ্গলবার ║ ১১ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৬শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১১ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ:

    সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত চবি শিক্ষার্থী, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেহেনা আক্তার তানিয়ার সড়ক দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর যথাযথ বিচার এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চবি সমাজতত্ত্ব পরিবার।

    বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভাগের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

    মানববন্ধনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ‘আমার বোন মরলো কেন, প্রশাসন জবাই চাই’, ‘ সড়ক সড়ক সড়ক চাই, নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘বিচার চাই বিচার চাই, বোন হত্যার বিচার চাই’, ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘আমার বোন ঘুমায়, প্রশাসন ঝিমায়’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

    সমাজতত্ত্ব বিভাগের ৫৫ ব্যাচের তনজিহা বিনতে কবির বলেন, আজকে আমরা অনেক শোকাহত, তানিয়া আপুর সকল সম্ভাবনা একনিমিষেই শেষ হয়ে গেল। এটি কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নয় এর দায় রাষ্ট্রের। অধিকাংশ ড্রাইভারদের লাইসেন্স নেই এবং তাদের মধ্যে আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় এই দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়। তার মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। তানিয়া আপুর পরে যেন আর কারো রাস্তায় প্রাণ দিতে না হয়।

    তানিয়ার সহপাঠী ঈসমীতা আক্তার বলেন, আমি ডিপার্টমেন্টে ৬ বছর সিআর ছিলাম। তার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। গত একটি অনুষ্ঠানে তিনি আমাদের সাথে ছিলেন। তার ছবি-ভিডিওগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। এভাবে একজন সহপাঠীকে হারানোয় আমরা ভীষণ মর্মাহত।

    সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক জনাব সদরুল আলম কনক বলেন, তরুয়া এবং ফরহাদের জীবন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তানিয়ার জীবনও তেমন গুরুত্বপূর্ণ। তানিয়ার মতো শতশত মানুষ এভাবে রাস্তায় নিহত হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে রাষ্ট্রের কোন মাথা ব্যথা নেই। ঘর থেকে বের হয়ে আবার ঘরে ফিরতে পারবো কিনা তার নিশ্চয়তা নেই। হাটহাজারী থেকে অক্সিজেনের রাস্তায় প্রচুর যানজট এবং সরু এ রাস্তায় অনেকগুলো দোকান বসানো। মানুষের কাজই যেন রাস্তায় যাওয়া, আর প্রাণ হারিয়ে আসা। এরপরে হয়তো পরিবর্তন হবে, কিন্তু তানিয়ার জীবন আর ফিরে আসবে না।

    এ সময় সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, গত ১৮ তারিখে তানিয়াসহ আমরা একসঙ্গে মাস্টার্সের বিদায় অনুষ্ঠানে কেক কেটেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি এখন আমাদের মাঝে নেই। দুর্ঘটনা ঘটার রাস্তায় কোন ডিভাইডার নেই এ পর্যন্ত ২২জন প্রাণ হারিয়েছে একই রাস্তায়। বেশিরভাগ ড্রাইভারদের লাইসেন্সও নেই। তানিয়ার মৃত্যুর জন্য প্রশাসনকে দায় নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসন থেকে তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করতে হবে। এরপরে আর যেন কোন তানিয়ার এভাবে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারাতে না হয়।

    মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা শহিদ মিনার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে সমবেত হন। এ সময় তারা প্রক্টর বরাবর ৪দফা দাবি পেশ করেন।

    এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, প্রক্টর হিসাবে ব্যক্তিগত ভাবে পাবলিকলি শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করার জন্য যথাসাধ্যভাবে যেখানে যাওয়া দরকার তা আমি নিশ্চিত করবো। ক্ষতি পূরণের জন্য হায়ার অথোরিটির সাথে দ্রুত কথা বলে এটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতের জন্য ফটিকছড়ি প্রশাসনের সাথে দ্রুত কথা বলবো।

    এর আগে, মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাটের আজম সড়কে চট্টগ্রামগামী টেম্পুর সঙ্গে বিবিরহাটগামী সিএনজির সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজিতে থাকা তিনজন সড়কে ছিটকে পড়েন। স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহতাবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেহানা আক্তার তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

    এছাড়া, আহতদের মধ্যে পারভেজ নামে এক যুবকের শরীর থেকে হাতের কব্জি আলাদা হয়ে যায়। তাকে উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। আহত যাত্রী অঞ্জনা দাস নামে এক নারী গুরুতর আহতাবস্থায় চমেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print

    সর্বাধিক পঠিত

    আমাদের ফেসবুক

    আমাদের ইউটিউব

    সর্বশেষ খবর