
চট্টগ্রামে সাম্পান ঘাটের ইজারা ফিরে পাওয়া, কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও পেশাদার সাম্পান মাঝি সমিতিকে ঘাট ইজারা দেওয়ার দাবিতে বৈঠা বর্জন কর্মসূচি পালন করেছে কর্ণফুলীর সাম্পান চালকদের কয়েক’শ সাম্পান মাঝি।
(২০ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার বেলা ১১ দিকে চট্টগ্রাম নগরীর অভয়মিত্র ঘাট থেকে কর্ণফুলী নদীতে তারা সাম্পান নিয়ে এই বৈঠা বর্জন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ তাদের দাবির সাথে সহমত পোষণ করে জন্মগত পেশাদার পাটনীজীবী (সাম্পান মাঝি) সমিতিকে ঘাট ইজারা না দেওয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।
কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এস এম পেয়ার আলী বলেন, ‘২০০৩ সালের পাটনিজীবী নীতিমালা তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে মাঝিদের ঘাটছাড়া করেছে চসিক (চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন)। এর প্রতিবাদে আমরা গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আমাদের সাম্পান মাঝি কোনো কথায় শুনতে চাইনি।
এ-সময় বক্তারা বলেন, প্রকৃত মাঝি মোল্লাদের পেটে লাথি মেরে ১০টাকা ভাড়া ৩০টাকা করে নিয়ে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা অসৎ উপায়ে সমিতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে ঘাট ইজারা নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, মাঝিরা কোন উপায় না পেয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র মহোদয়ের কাছে গেলে তিনি মাঝিদের কোন কথা শুনতে রাজি হননি।
বক্তারা আরও বলেন,আমরা যুগ যুগ ধরে আমাদের বাপ দাদার আমল থেকে যারা কর্ণফুলী নদীতে সাম্পান চালায় আমাদের একমাত্র উপার্জনের উৎস হচ্ছে কর্ণফুলীর এই সাম্পান ঘাটগুলো,এই ঘাট যদি না থাকে তাহলে আমাদের অনেক মাঝিদের না খেয়ে থাকতে হবে, তাই সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র মহোদয়ের প্রতি আমাদের আকুল আবেদন থাকবে আপনার সব কিছু যাচাই-বাছাই করে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে প্রকৃত মাঝিমল্লাদেরকে এই ঘাটগুলো ইজারা দিন। অন্যতাই আমরা সামনে এর থেকে আরও বৃহৎ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
বৈঠা বর্জন করা সাম্পান মাঝিরা জানান, পহেলা বৈশাখ পেশাগত সাম্পান মাঝিদের (পাটনিজীবী) থেকে ঘাট কেড়ে নিয়ে নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ইজারা দেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এর প্রতিবাদ জানিয়ে মাঝিরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি লিখিত অভিযোগও করেন।ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২৯ এপ্রিল পাটনিজীবীকে ঘাট ইজারা দিতে বলা হলেও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এ বিষয়ে পুনরায় আইনি মতামতের জন্য নির্দেশনাটি চসিক আইন কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন। এরপর গত ছয় মাসেও মাঝিদের ঘাট ফিরিয়ে দেয়নি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশ।
কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এস এম পেয়ার আলীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, প্রধান সমন্বয়ক চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, রাজনৈতিক ও পরিবেশ সংগঠক মিতুল দাশগুপ্ত, নারী নেত্রী হাসিনা আকতার টুলু, বিপ্লবী তারেকেশ^র দস্তিদার পরিষদের সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সিঞ্চন ভৌমিক, আরকেএস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী জাহেদুল করিম সিকদার বাপ্পি, আবৃত্তিকার ও উপস্থাপক দিলরুবা খানম, শিক্ষিকা রোপি দাশ, সাংবাদিক রোজি চৌধুরী, কৃষিবিদ গোলাম মোস্তফা, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যান সমিতি ফেডারেশনের সহ—সভাপতি জাফর আহমদ, সাধারন সম্পাদক শাহ আলম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক লোকমান দয়াল, যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান,সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন আবুল, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ ইউসুফ, মোহাম্মদ আকরাম, রাশেদ, আবুল কালাম প্রমুখ।