
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে নৌকার বিজয়ী প্রার্থী ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, দলের সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে আগামীতে পটিয়াকে একটি স্মার্ট এবং আর্দশ উপ-শহর গড়বেন। তাছাড়া পটিয়াকে কিশোর গ্যাং, ইয়াবা ও দুনীতিমুক্ত করা হবে। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর লোকজন নৌকার কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের পরের দিন শোভনদন্ডী ও কুসুমপুরা ইউনিয়নে নৌকার সর্মথককে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে। পটিয়ার হারানো ইমেজ ফিরিয়ে আনতে দলমত নির্বিশেষে সকলে ভুমিকা রাখতে হবে।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পটিয়ার নৌকার বিজয়ী প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এ কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাবেক মহিলা এমপি চেমন আরা তৈয়ব, দক্ষিণ জেলা আওয়াামী লীগ সহ সভাপতি আইয়ুব আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান ডা: তিমির বরণ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ম.ম টিপু সুলতান চৌধুরী, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল রশিদ, সদস্য রাশেদ মনোয়ার, নাছির উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম এ আব্দুল মতিন চৌধুরী, কাজী আবু তৈয়ব, মোজাহেরুল আলম চৌধুরী, ডক্টর জুলকারনাইন চৌধুরী জীবন, সত্যজিত দাশ রুপু, গোলাম সরোয়ার চৌধুরী মুরাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তালেব, চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম, এহসানুল হক, মাহাবুবুর রহমান, শাহিনুর ইসলাম শানু, জাকারিয়া ডালিম, আমিনুল ইসলাম খান টিপু, আওয়ামী লীগ নেতা মুহাম্মদ ছৈয়দ,শাহাদাত হোসেন ফরিদ, আজিমুল হক, ঋষি বিশ্বাস, এডভোকেট এম হোসাইন রানা, আবুল হাসনাত খোকন, যুবলীগ নেতা আব্দুল হান্নান লিটন, হাসান উল্লাহ চৌধুরী, ইমরান উদ্দিন বশির।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ যেসব প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি হয়েছে সকলের অনুরোধে তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ভুমি অধিগ্রনের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন। তাছাড়া পটিয়ায় বন্ধ করা হবে ভুমিদস্যুতা। অতীতে যারা এসব কাজে জড়িত ছিলেন তাদেরকে সর্তক করে দেন।
তিনি বলেন, ‘জীবনের প্রায় ৬০ বছর ধরে রাজনীতি করে এসেছি কিছু পাওয়ার জন্য নয়। যৌবনের সুবর্ণ সময়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে হুলিয়া, মামলা, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি। আমাদের আদর্শিক নেতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে নির্মম হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের যে ক’জন ছাত্র, যুবনেতা প্রতিবাদ প্রতিরোধে অংশ নিয়েছিলেন, আমি তাদের মধ্যে অন্যতম।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরপর দু’বার গ্রেপ্তার করে সামরিক শাসক জিয়ার সেনাবাহিনী আমার উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে আছি সেনা ক্যাম্পের নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে।’
মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সামরিক শাসকের প্রলোভন, হুমকি, নির্যাতন কিছুই আমাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। এক নেতার আদর্শে তরুণ বয়সে শুরু করা রাজনীতিতে অটল থেকে এখন জীবন সায়াহ্নে এসেছি। রাজনীতি করেছি কখনও পাওয়ার জন্য নয়, রাজনীতিতে জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছি। কখনও ভাবিনি রাজনীতি করতে গিয়ে কিছু হবো। ইতোপূর্বে আমার দলের নেত্রী আমাকে উপজেলা চেয়রম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে নিজের সততা এবং নিষ্ঠাকে ধরে রেখেছি। আমার আশপাশে কি হচ্ছে, কে কি করেছে সেদিকে গা ভাসাইনি। অনেক ক্ষেত্রে কারও কারও সাথে গা না ভাসিয়ে চক্ষুশূল হতে হয়েছে। এ কারণে আমাকে নানাভাবে ঠেকানোর চেষ্টা হয়েছে।
সর্বশেষ তাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে জাতীয় সংসদে সদস্য হওয়ার সুযোগ দেয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সাথে কৃতজ্ঞতা জানান আধ্যাত্মিক জগতের পুণ্যভূমি, বিপ্লব তীর্থ, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক অঙ্গণের চারণভূমি বীর পটিয়ার সর্বস্তরের জনসাধারণ এবং আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের সকল নেতাকর্মীর প্রতি। নির্বাচনে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।