আজ সোমবার ║ ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১৭ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ৯ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সর্বশেষ:

    সুষ্ঠু নির্বাচনেই গণতন্ত্র ফিরবে :আমীর খসরু

    Share on facebook
    Share on whatsapp
    Share on twitter

    দেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্বের কথা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ বলেছেন, এখন আমাদের প্রথম কাজ হবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গণতন্ত্র ফিরে আনতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক। জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া পাওয়ার কথাগুলো বলতে পারবে, যা এখন কেউ বলতে পারছে না।

    তিনি সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকালে নগরীর কাজীর দেউরীস্থ আলমাস সিনেমার সামনে বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির র‍্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

    সমাবেশ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আলমাস সিনেমার সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কাজীর দেউরী, জুবলী রোড়, এনায়েত বাজার, তিনি পুলের মাথা হয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

    চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম।

    আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্র ফেরার পথে যদি কেউ বাধা দিতে চায়, নির্বাচনকে বাধা দেওয়া মানে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করা, বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা বন্ধ করা এবং আগামীতে মানুষের রাজনৈতিক সংবিধানিক অধিকারে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা। সুতরাং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

    তিনি বলেন, আজকে দক্ষিণ এশিয়াতে বিএনপি সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এটার কারণ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম, উন্নয়নের উদ্যোগ, চাষি, কৃষক শ্রমিক পেশাজীবি সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশ। শহীদ জিয়া বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের চিন্তা চেতনায়, ভাবনায়, উদ্যোগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় দিয়েছিলেন। তা পরবর্তীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিস্টমুক্ত এবং স্বৈরাচারমুক্ত দেশে আবার সেই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছে আমাদের নেতা তারেক রহমান।

    তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন ইতোমধ্যে সমস্ত দেশের মানুষ তারেক রহমানের প্রতিটি স্বপ্নের সাথে নিজেদেরকে দেখতে পাচ্ছে। স্বপ্নগুলো কী? এক নম্বর স্বপ্ন হচ্ছে, দেশের মানুষের কর্মসংস্থান। তারেক রহমান বলেছেন, ক্ষমতায় দেশের মানুষ যদি আমাদের সরকারের দায়িত্ব দেয়, প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। চাকরি করবে, ব্যবসা করবে, দেশে কর্মসংস্থান, বাইরে কর্মসংস্থান সবকিছুর পরিকল্পনা ইতোমধ্যে সমাপ্তি হয়েছে।

    দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, দেশের মানুষের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসার সব ধরনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি যদি দায়িত্ব পায়, দেশের সাধারণ মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পকেট থেকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। দেশের মানুষের শিক্ষা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশাল বিনিয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

    তিনি বলেন, এই স্লোগানটি শুধুমাত্র রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ নয়, অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে আগামী বাংলাদেশে অর্থনীতিতে উন্নয়নের সহযোগিতা করতে পারে, অংশগ্রহণ করতে পারে, নিজেদের জীবনযাপনের মান উন্নয়ন করতে পারে, এটাই হবে আগামী বাংলাদেশ, তারেক রহমানের নেতৃত্বে। আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

    তিনি দেশের অর্থনীতি ও পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের জন্য বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। এছাড়া, আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে কামারকুমার থেকে শুরু করে যারা কাজ করছে, তাদের জন্য বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে ইনশাল্লাহ। বাড়িতে বসে পণ্য তৈরি করে বিদেশি রপ্তানি করার ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শেয়ার বাজার, ব্যাংকিং সহ সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে সবাই যাতে এই সুযোগ পায়, সবাই যাতে ব্যবসা এবং চাকরিতে অংশগ্রহণ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে।

    তিনি বলেন, দেশের মানুষের হৃদয় জানে, আজকে বাংলাদেশে ধানের শীষের জোয়ার শুরু হয়েছে। এই জোয়ারকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে তারা ভেসে যাবে। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। দেশের মানুষ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করতে পারবে। এখন কেউ যদি মনে করে তারা নির্বাচিত হতে পারবে না, সেজন্য নির্বাচনের প্রয়োজন নেই, সেটা তাদের সমস্যা, এটা বাংলাদেশের মানুষের সমস্যা নয়। সুতরাং বার্তা পরিষ্কার, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সমস্ত জনগণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

    নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদেরকে গ্রামে গঞ্জে যেতে হবে, তারেক রহমানের নির্দেশিত খালকাটা প্রকল্প হাতে নিতে হবে। প্রত্যেক এলাকার খালগুলো কেটে পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হবে। সবকিছু সমাধান হবে ইনশাল্লাহ। তারেক রহমান সাহেব ৩০ কোটি গাছ লাগাবেন। সকলে মিলে আগামী বাংলাদেশ করতে হবে। নেতা নয়, সকলের অবদান থাকতে হবে। এজন্য রাজনীতির সাথে সাথে আমরা অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রের কথাও বলছি।

    প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আমরা এখন নির্বাচনের সড়কে ঢুকেছি। আগামী ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য জনগণ উন্মুখ হয়ে আছে। দেশের মানুষ ধানের শীষের অপেক্ষায় আছে। লক্ষ জনতা আজকে এখানে জমায়েত হয়েছে শুধুমাত্র গণতন্ত্রের যে অগ্রযাত্রায় আমরা নেমেছি, সেটাকে সফলভাবে আরো বেশি সমাদর করতে। এ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে কেউ যাতে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতৃত্বে দেশের মানুষ ভোটাধিকার রক্ষার সংগ্রাম করেছে। আজকে শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, কিছু কিছু শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের জন্য কোনো জায়গা দেওয়া হবে না। গণতন্ত্রের বিজয়ের পথে আমরা চলছি, দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এ পথে যারা বাধাগ্রস্ত করবে আগামীদিনে দেশের মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে।

    ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, আজকে দেশে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।নির্বাচন শেষ করতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামী দিনগুলো চলতে হবে। কোন শক্তি যাতে নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে, সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।

    সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেন, একটি মহল আছে তারা রাজনীতি করবে, কিন্তু ভোটে যাবে না। গণতন্ত্র বিশ্বাস করবে না। তারা রাজনীতি করবে জনগণকে বাইরে রেখে।যেটা শেখ হাসিনা বারবার করেছে। আবারও কিছু শক্তি নেমেছে দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের মতো করে দেশ চালাতে। এটা বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিনও গ্রহণ করবে না।

    আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই দিন থেকে শপথ নিতে হবে। সকলে যার যার এলাকায় যেতে হবে, মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে। আগামী দিনের যে কর্মসূচি, দেশের মানুষের সকল রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার যে রূপরেখা বিএনপি তৈরি করেছে, তা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।

    এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব ইদ্রিস মিয়া, সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান প্রমুখ।

    Share on facebook
    Share on twitter
    Share on whatsapp
    Share on linkedin
    Share on telegram
    Share on skype
    Share on pinterest
    Share on email
    Share on print