চট্টগ্রাম ৪র্থ পর্যায়ের অবশিষ্ট ৮৬টি, ৫ম পর্যায়ের ৮১টি এবং জরাজীর্ণ ব্যারাক প্রতিস্থাপন করে একক গৃহ নির্মাণ ১০০টিসহ ২৬৭টি পরিবারকে জমিসহ ঘরের মালিকানা ১৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) হস্তান্তর করা হবে।
১৩ নভেম্বর (সোমবার) ট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিপীড়িত, শোষিত বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করেন স্বাধীন বাংলাদেশ। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নবীন দেশে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারীতে নোয়াখালী সফরে গিয়ে আশ্রয়হীনদের প্রথম পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু। তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ১ম বার সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে আশ্রয়হীনদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি অর্থায়নে প্রথম উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করেন “আশ্রয়ণ প্রকল্প”। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বাসস্থান নিশ্চিতের ঘোষনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি উদ্যোগে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদানের এ নজির পৃথিবীর বুকে অনন্য।
“মুজিবশতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর মাধ্যমে সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১ম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সারাদেশে ৬৩,৯৯৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে ১৪৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে ২য় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন সারাদেশে মোট ৫৩,৩৩০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্য চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে।
১ম ও ২য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ৩য় পর্যায়ে ২০২২ সালের এপ্রিলে সারাদেশে ৩২,৯০৪ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ১২১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে একই বছরের ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ৩য় পর্যায়ের (২য় ধাপ) ২৬,২২৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ (দুই) শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সেসময় চট্টগ্রাম জেলায় ৫৮৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার ৪টি উপজেলা যথাক্রমে-পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলাকে হালনাগাদ যাচাই-বাছাইকৃত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিগত ২০২২ সালের ২১ জুলাই ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ১ম, ২য় এবং ৩য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ৪র্থ পর্যায়ে ২০২৩ সালে ২২ মার্চ সারাদেশে ৩৯,৩৬৫ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ১৫৯টি এবং ৪র্থ পর্যায়ের ৮৯৩টিসহ মোট ১০৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়। এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার ২টি উপজেলা যথাক্রমে-রাউজান ও বোয়ালখালী উপজেলাকে হালনাগাদ যাচাই-বাছাইকৃত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গত ২২ মার্চ ২০২৩ ইংরেজি তারিখে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গত ৯ আগস্ট ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ (দুই) শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয় এবং হাটহাজারী ও আনোয়ারা উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষনা করা হয়। ১৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ৪র্থ পর্যায়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ৮৬টি, ৫ম পর্যায়ে চন্দনাইশে ৩৫টি, বাঁশখালীতে ৪৬টি ও চন্দনাইশ উপজেলায় জরাজীর্ণ ব্যারাক প্রতিস্থাপন করে একক গৃহ নির্মাণ ১০০টি পরিবারসহ মোট ২৬৭টি পরিবারকে গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধন করা হবে।
এ পর্যন্ত মোট ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর বরাদ্ধ প্রদানের তালিকাঃ ১ম পর্যায়ে ১৪৪৪টি, ২য় পর্যায়ে ৬৪৯টি, ৩য় পর্যায়ে ১৬২টি, ৪র্থ পর্যায়ে ১১৩৭টি, ৪র্থ পর্যায়ের অবশিষ্ট ৮৬টি, ৫ম পর্যায়ে ৮১টি ও জরাজীর্ণ ব্যারাক প্রতিস্থাপন করে একক গৃহ নির্মাণ ১০০টি পরিবারসহ সর্বমোট ৫৪৫৯টি পরিবার।
১৪ নভেম্বর বাঁশখালী, ফটিকছড়ি এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষনা করা হবে। ইতোপুর্বে চট্টগ্রাম জেলায় ৮টি উপজেলা যথাক্রমে-পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, রাউজান, বোয়ালখালী, আনোয়ারা এবং হাটহাজারী উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। অর্থাৎ চট্টগ্রাম জেলার সন্ধীপ, সীতাকুন্ড, মীরসরাই এবং চন্দনাইশ উপজেলা ব্যতীত অবশিষ্ট ১১ টি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হবে।