পটিয়া আল-জামিয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামজা’র পদত্যাগ ও অব্যাহতি নিয়ে বুধবার (১ নভেম্বর) দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী আয়োজন করেছে। অব্যাহতি প্রাপ্ত মহাপরিচালক মুফতি ওবাইদুল্লাহ হামযার পক্ষ থেকে দুপুর ১২টায় পটিয়া থানার মোড় চত্ত্বরে ছাত্র-শিক্ষকের একটি গ্রুপ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। এতে মাওলানা ইমতিয়াজ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মাওলানা হাবিবুল্লাহ, আজিজুল হক, সাইফুদ্দীন সাইফি, মোহাম্মদ আজিজ, আহসান, আমিনুল হক, ওমর ফারুক, আবদুল আলিম, ওমর ফারুক চাট্গামী।
এ সময় বক্তরা বলেন, পটিয়া আল-জামিয়া মাদরাসা কতিপয় মাওলানার ষড়যন্ত্রের শিকার মুফতি ওবাইদুল্লাহ হামযা। গত ২৮ অক্টোবর রাত ১২ টায় আন্দোলনের নামে একটি উশৃঙ্খল ছাত্র-শিক্ষক গ্রুপ মাদ্রাসায় তান্ডব চালায়। বিক্ষোভ প্রদর্শন করে মহাপরিচালকের বাসা ঘেরাও করার পর ভোর ৪ টায় একটি পদত্যাগ পত্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে তাকে মাদরাসা থেকে বের করে দেয়। মজলিশে সূরার সদস্য নয়, এমন ব্যক্তিদের দিয়ে ২৯ অক্টোবর পদত্যাগ পত্রখানা গৃহীত করে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ জানান এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
অন্যদিকে গতকাল বুধবার (১ নভেম্বর) বিকাল ৩ টায় আল-জামিয়ার নতুন পরিচালনা পর্ষদের উদ্যোগে পটিয়া আল-জামিয়া প্রাঙ্গনে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা নুরুল কবির আনসারী। উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে মাদরাসার প্রায় সহ¯্রাধিক ছাত্র উপস্থিত ছিলেন মাদ্রসার পরিচালনা পর্ষদের আহবায়ক আল্লামা আবু তাহের নদভী, মুফতি শামসুদ্দীন জিয়া, মাওলানা নুরুল কবির আনসারী, মাওলানা জাফর ছাদেক, মাওলানা আমিনুল হক ও মাওলানা আকতার হোসেনসহ অসংখ্য শিক্ষক ও কয়েক হাজার শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
তারা লিখিত বক্তব্যে জানান, মুফতি ওবাইদুল্লাহ হামযা কৌশলে মহাপরিচালকের পদটি দখল করেন। এ পদ দখল করার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রবীন ৭/৮ জন শিক্ষকের দায়িত্ব খর্ব করেন। তাদের ন্যায প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেন। অনেক মুহাদ্দিসকে অপমানিত করে তিনি মুহাদ্দিসের দায়িত্ব নেন। তিনি এককভাবে বাসায়, অফিসে, রুমে এসি, আইপিএস ও জেনাটার সুবিধা ভোগ করলেও প্রবীণ মুরব্বী ও ওস্তাদগণের সে সুবিধা ভোগ করতে দেয়নি। বিভিন্ন সভা-সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে প্রচুর অর্থ ব্যয় করলেও শিক্ষক কর্মচারীদের বোখারী শরীফের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করতে দেয়নি। ছাত্র-শিক্ষকদের অসাদাচরণ, স্বেচ্ছাচারিতা, গ্রুপিং সৃষ্টি, ছাত্র-শিক্ষদের মামলা হামালার ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নির্মমানের খাবারসহ অশালিন আচরণ ও গালমন্দ করতেন। তার আচরণ সহ্য করতে না পেরে জামিয়ার প্রবীণ ওস্তাদ মাওলানা নুরুল আবচার ষ্ট্রোক করেন। তার কার্যকলাপে অতিষ্ট হয়ে গত ২৮ অক্টোবর ছাত্র-শিক্ষকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এতে নিরুপায় হয়ে তিনি পদত্যাগ পত্র দেন। গত ২৯ অক্টোবর বাদে মাগরিব মজলিশে সূরার বৈঠকে তার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করে তাকে সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়ে একটি পরিচালনা পরিষদ গঠন করা হয়। এতে আল্লামা আবু তাহের নদভীকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।