পটিয়ায় আল জামিয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় নিয়মবর্হিভুত বিভিন্ন কাজ ও কর্তৃত্ব নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন মাদ্রাসার ছাত্র মো. জাকারিয়া ও মওলানা রাকিবুল ইসলাম। এর মধ্যে জাকারিয়ার মাথায় পাঁচটি সেলাই করা হয়েছে। সে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। শনিবার রাত ১২টার দিকে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির কর্তৃত্ব নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারী ছাত্ররা হাতে লাঠি ও লোহার রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র হাতে মুখোশ পরে অন্ধকারে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায়। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে পটিয়া থানার অর্ধশতাধিক পুলিশ মাদ্রাসার বাইরে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভ চলাকালে ছাত্ররা এক দফা দাবি ঘোষণা করে মাদ্রাসার প্রধান পরিচালক ও মহতামিম ওবায়দুল্লাহর হামজার অপসারণ দাবি করেন। এসময় আন্দোলনকারি ছাত্ররা মসজিদের মাইকে ওবায়দুল্লাহ হামজার অপসারণ দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মাদ্রাসার সকল লাইট বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশ মাদ্রাসার মহা পরিচালক মুফতি ওবায়দুল্লাহ হামযাকে উদ্ধার করেছেন। তবে এর আগে উত্তেজিত ছাত্ররা মহা পরিচালকের কাছ থেকে একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল রবিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে মাদ্রাসার মহা পরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামযা তার বাসায় ভাংচুর, মোবাইল লুট ও জোরপূর্বক মহাপরিচালক পদ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ৪০/৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে পটিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কওমীপন্থী পটিয়া আল জামেয়া আল ইসলামি মাদ্রাসায় কর্তৃত্ব ও বিভিন্ন অনিয়মের কারণে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর মধ্যে মাদ্রাসার মহা পরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামযা ও অপরপক্ষ একই মাদ্রাসার প্রধান মুফতি শায়খুল হাদিস হাফেজ আহমদুল্লাহ, মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক আবু তাহের নদভীসহ সিনিয়র শিক্ষকরা রয়েছে। একক কর্তৃত্ব খাটানো ছাড়াও অর্থ কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে মাদ্রাসার মহা পরিচালকের অপসারণ চেয়ে শনিবার রাতে উত্তেজিত ছাত্ররা মাদ্রাসায় বিক্ষোভ করেন। এসময় দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত রবিবার বিকেলে মাদ্রাসার প্রধান গেইটসহ প্রবেশমুখের গেইটগুলোতে তালা ঝুলে দেওয়া হয়েছে। দুইপক্ষ লাঠিসোঠা নিয়ে মাদ্রাসার ভিতরে বাইরে অবস্থান নিয়েছে।
পটিয়া আল জামেয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক আবু তাহের নদভী জানিয়েছেন, মাদ্রাসার মহা পরিচালক বিরুদ্ধে নিয়মবর্হিভুত বিভিন্ন অভিযোগ ওঠেছে। প্রতি বছর মাদ্রাসার সূরা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও গত ১ বছর ৬ মাসে কোন বৈঠক পর্যন্ত হয়নি। ফলে ছাত্র ও শিক্ষকরা মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি বিশৃঙ্খলা হচ্ছে এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে।
পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার জানিয়েছেন, পটিয়া মাদ্রাসায় আধিপত্য নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। মহা পরিচালক বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান