২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশী গ্রেফতার ও ঘরে ঘরে তল্লাশী চালিয়ে হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মো. নাছির উদ্দীন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বিএনপিকে রাজনীতির মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে নেতাকর্মীদের কারাগারে প্রেরণ করছে সরকার। আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে এবং ঘরে ঘরে তল্লাশীর নামে হয়রানি করছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হালিশহর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৫ নং রামপুর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারন সম্পাদক আলী হায়দারকে বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া আকবর শাহ থানার পুলিশ উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড বিএনপি নেতা সেলিম উদ্দিন সাল্লু, উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক শাহাদাত হোসেনকে, ডবলমুরিং থানা পুলিশ কোকো স্মৃতি সংসদের প্রচার সম্পাদক মো. সুমনকে, বাকলিয়া থানা পুলিশ দক্ষিন বাকলিয়া ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা কাইয়ুম আহমদ জয় ও শওকত হোসেন সহ ৬ জনকে বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে। তারা কিন্তু কোন মামলার এফআইআর ভুক্ত আসামী নন। তারপরও তাদেরকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পুলিশ চট্টগ্রামে বিভিন্ন নেতাকর্মীর বাসায় গিয়ে তল্লাশির নামে পরিবারের সদস্যদেরকে হয়রানি করছে। ইতিমধ্যে পুলিশ সদরঘাট থানা বিএনপির সভাপতি হাজী মো. সালাউদ্দিন, পাঁচলাইশ থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মনির আহমদ চৌধুরী, ৩০ নং পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ড বিএনপির আহবায়ক মশিউল আলম স্বপন, হালিশহর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন আহমেদ কবির, মহানগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক এরশাদ হোসেন, সদরঘাট থানা যুবদলের সদস্য সচিব মোহাম্মদ রাশেদ, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নুর খাঁন, সদরঘাট থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আনোয়ারুল আবেদীন মুন্না, কোতোয়ালি থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রবিউল ইসলাম, আকবরশাহ থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বাবু পাটোয়ারী ও চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রবিনের বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে হয়রানি করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএনপি তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরকে নিয়েই রাজনীতি করেন। তারাই আমাদের বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়। যারা তৃণমূলে আমাদের সমর্থকদের সংগঠিত করে, তাদেরকে বেছে বেচে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর কারণ, তারা যাতে নির্বাচনের সময় মাঠে থাকতে না পারেন। গত বছর পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের তালিকা করেছে এখন সেই তালিকা ধরে ধরে নেতাকর্মীদের বাসায় অভিযান চালানো হচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীদের বাসায় থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। বিএনপি নেতাকর্মীদের রাজনীতি থেকে দুরে রাখতেই পুলিশ এখন এই পন্থা নিয়েছে। একদিকে নতুন মামলা ও অন্যদিকে পুরাতন গায়েবি মামলার চার্জ গঠন করে আদালতে আমাদের আটকে দেওয়া হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপিকে মাঠ ছাড়া করতেই সরকার আবারও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা শুরু করেছে। আমাদের নেতাকর্মীদের মামলাগুলো দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় সবক্ষেত্রে ব্যর্থ বর্তমান অবৈধ সরকার এখন দিশেহারা হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গায়েবী মামলা দিয়ে গ্রেফতারের খেলায় মেতে উঠেছে। লক্ষ্য একটাই, আবারও বিনাভোটে জোর করে, কারচুপি করে যেনতেনোভাবে ক্ষমতা দখল করা। এই লক্ষ্যে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং হত্যা, গুমসহ অব্যাহত গতিতে গ্রেফতার করে কারান্তরীণের মাধ্যমে গোটা দেশকেই কারাগারে পরিনত করেছে সরকার। এ ধরনের অপকর্ম সরকারের চলমান প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। আমরা এই গ্রেফতার ও হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। পাশাপাশি চট্টগ্রামে এইসব রাজনৈতিক হয়রানিমূলক গ্রেফতার বন্ধের দাবী জানায়।
নেতৃবৃন্দ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।